চীনা মোবাইলের ওপর ভর করে ভারত এখন স্মার্টফোন বিক্রির নিরিখে বিশ্বের বাজারে আমেরিকাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল অনেকখানি। এই প্রথম ভারতের স্থান সমগ্র বিশ্বে চীনের পরেই। ১৫৮ মিলিয়ন শিপমেন্ট -এ পৌঁছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল ভারত। ২০১৯ সালে ইয়ার অন ইয়ার ৭ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে ভারতের স্মার্টফোনের বাজারে। কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চ এই তথ্য পেশ করেছে সদ্যই।
২০১৯ সালে ২৮ শতাংশ মার্কেট শেয়ার দখলে রেখেছে শাওমি। তারপরে ২১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে স্যামস্যাং। আর আপাতত ১৬ শতাংশ শেয়ার নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিভো। কাউন্টারপয়েন্টের 'মার্কেট মনিটর' সার্ভিস এই তথ্য প্রদান করেছে।
স্মার্টফোন বাজারের যে বৃদ্ধি ঘটেছে ভারতে তা চমকপ্রদ। বার্ষিক হিসেবের প্রেক্ষিতে এই প্রথম ভারত একক সংখ্যায় পৌছল। ৪জি আসার পর থেকেই ভারতের বাজার ধারেও ভারে বেড়েছে এবং বিশ্বের বাজারের হিসেবে প্রায় ৫৫ শতাংশ ক্রেতা ভারতের। আগের বছরে চীনা ব্যান্ডগুলির শেয়ার ছিল ৬০ শতাংশ, এই আর্থিক বছর অর্থাৎ ২০১৯ অবধি তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ শতাংশ। ছোটো বড়ো প্রায় সব চীনা ব্র্যান্ড অনলাই ও অফ লাইন দুদিকের বাজারেই আবির্ভূত হয়েছে যাতে দুই তরফ থেকেই তাদের মার্কেট শেয়ার বাড়ে। শাওমি, রিয়ালমি এবং ওয়ানপ্লাস বাড়িয়ে নিয়েছে তাদের অফলাইন সেন্টার আর ভিভো নিজেদেরকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনলাইনে নিয়ে এসেছে জেড এবং ইউ সিরিজ।
গত চার বছরের মধ্যে যথাক্রমে শাওমি, ভিভো এবং ওয়ানপ্লাস নিজেদের এগিয়ে নিয়ে গেছে ১৫ গুণ, ২৪ গুণ এবং ১৮ শতাংশ। এখন এদের সাফল্যের ও বাজার দখলের দুর্বার গতি প্রায় অপ্রতিরোধ্য বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
স্যামসাঙ শিপমেন্ট কিন্তু সেই তুলনায় অনেকটাই হতাশাজনক- ২০১৯ সালে প্রায় ৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে । সেইজন্যই হয়তো স্যামসাঙ দুটি ভিন্ন ধরণের নতুন পোর্টফোলিও এনেছে ভিন্ন ধরণের ক্রেতার কথা মাথায় রেখে। অফলাইন বাজারের জন্য এনেছে এ সিরিজ আর অনলাইন বাজারে লঞ্চ করেছে এম সিরিজ।
তবে ফিচারফোনের বাজারে সাঙ্ঘাতিক পতন ঘটেছে। স্মার্টফোন বাজারের হিসেব নির্ধারিত হয় ইয়ার অন ইয়ার-এ কিরকম বৃদ্ধি ঘটল সেই নিরিখে। সেখানে দেখা যাচ্ছে ২০১৯ এর ইয়ার অন ইয়ারে ৪২ শতাংশ এবং কিউ৪ ২০১৯ -এ ইয়ার অন ইয়ারে ৩৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে ফিচারফোনের বিক্রি-বাজার। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এর কারণ রিলায়েন্স জিও-এর শিপমেন্টে নতুন করে পতন। সামগ্রিক মন্দার নিরিখে আইটেল, লাভা, নোকিয়া এবং মাইক্রোম্যাক্স-এর কিন্তু আশানরূপ বৃদ্ধি ঘটেছে। এমনকি কিউ৪ ২০১৯-এ ফিচারফোনের বাজারে এক নম্বরে আছে আইটেল। তারপর যথাক্রমে রয়েছে স্যামসাং এবং লাভা।