এইই পাতার সাহায্যে চিরকাল দাগমুক্ত থাকবে ত্বক! আয়নার মতো চকচক করবে গাল
সুন্দর দেখাতে মহিলারা নানান ধরনের বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকেন। তবে আমরা যেসব বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করি তার বেশিরভাগেই ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে। এগুলো আপনার মুখকে সুন্দর করে তুললেও, ভবিষ্যতে ত্বকের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি ত্বকের স্থায়ী ক্ষতিও করতে পারে।
প্রাকৃতিক উপায়েও আপনি আপনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে পারেন। এগুলো আপনার মুখের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং, ত্বকের জন্য উপকারী। পেয়ারা পাতা হলো এমনই একটি প্রাকৃতিক উপাদান। হ্যাঁ, পেয়ারা পাতা দিয়েও মুখকে সুন্দর করে তোলা সম্ভব। এই পাতায় ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড সহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এগুলো আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। একই সাথে মুখের কালো দাগ, সাদা দাগ দূর করতেও সাহায্য করে।
কেউ কেউ শুষ্ক ত্বকের অধিকারী আবার কারও কারও ত্বক তেলতেলে। তেলতেলে ত্বকের অধিকারীদের যতই মেকআপ করা হোক না কেন, কিছুক্ষণ পরেই ত্বক তেলতেলে হয়ে যায়। এমন ত্বকে যেকোনো প্রসাধনী ব্যবহার করলেও তেমন কাজ হয় না। তবে এমন ত্বকের জন্য পেয়ারা পাতা খুবই উপকারী।
এজন্য প্রথমে এক মুঠো পেয়ারা পাতা নিয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এটি পেস্ট করে নিন এবং তাতে অল্প কিছু লেবুর রস মিশিয়ে মুখে এবং ঘাড়ে ভালো করে লাগান। ৩০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ এবং ঘাড় পরিষ্কার করে নিন। পেয়ারা পাতায় থাকা পুষ্টি উপাদান আপনার মুখের তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই পদ্ধতি তেলতেলে ভাব অনেকাংশে কমাতে সাহায্য করে।
মুখে কালো দাগ, ব্রণ থাকলে সুন্দর দেখায় না। মুখের দিকে তাকালেই এগুলো চোখে পড়ে। এই ত্বকের সমস্যার কারণে অনেক সময় মহিলারা বাইরে যেতেও আগ্রহী হন না। তবে এই সমস্যাগুলো দূর করতে পেয়ারা পাতা খুবই কার্যকরী।
পেয়ারা পাতা ব্যবহার করে মুখের সাদা দাগ, কালো দাগ, ব্রণের দাগ সহজেই দূর করা যায়। এজন্য এক মুঠো পেয়ারা পাতা নিয়ে তাতে অ্যালোভেরা জেল এবং অল্প হলুদ মিশিয়ে মসৃণ করে পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এভাবে ব্যবহার করলে মুখের ব্রণ এবং দাগ কমে যাবে।
শুষ্ক ত্বকের জন্যও পেয়ারা পাতা খুবই উপকারী। একই সাথে ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতেও পেয়ারা পাতা ব্যবহার করা হয়। এজন্য পেয়ারা পাতার স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। এক কাপ পেয়ারা পাতা নিয়ে তাতে পানি দিয়ে ১০ মিনিট ভালো করে ফুটিয়ে নিন। ঠান্ডা হওয়ার পর পানি ছেঁকে স্প্রে বোতলে ভরে নিন। মুখ ভালো করে ধোয়ার পর মুখে এই স্প্রে করুন।
মুখে বলিরেখা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, ব্যস্ত জীবনযাপন ইত্যাদি কারণে মুখে বলিরেখা দেখা দিতে পারে। এর ফলে পেশী শিথিল হয়ে পড়ে এবং বলিরেখা তৈরি হয়। তাই চাপমুক্ত এবং আনন্দময় জীবনযাপন করলে মুখে বলিরেখা পড়ার সম্ভাবনা কমে যায়। বয়সের সাথে সাথে মুখে বলিরেখা পড়া খুবই স্বাভাবিক। এমন অবস্থায় রাসায়নিক প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভালো।
নারকেল তেল মুখের বলিরেখা দূর করতে খুবই কার্যকর। তাই মুখে মেকআপ ব্যবহার করলে তা পরিষ্কার করার জন্য নারকেল তেল ব্যবহার করুন। নারকেল তেল দিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। ১০ মিনিট পর মুখ পরিষ্কার করলে পেশী টানটান হবে এবং বলিরেখা কমে যাবে।
টক জাতীয় খাবার ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে টক দই। টক দইয়ে ভিটামিন বি১২, শর্করা, ফ্যাট, ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এগুলো ত্বককে সুস্থ, সুন্দর এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। তাই আপনি টক দইয়ের ফেসপ্যাকও ব্যবহার করতে পারেন।
প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখে টক দই লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। টক দইয়ে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড মৃত কোষ দূর করে। ফলে মুখে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।