রামকৃষ্ণদেবের জন্মতিথি, ঠাকুর বলেছিলেন 'বাসনায় ডুবে থাকলে ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি হয় না'

কথিত আছে, শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মের পূর্বে তাঁর বাবা-মা বেশ কয়েকটি অলৌকিক ঘটনা ঘটেছিল। সন্তানসম্ভবা চন্দ্রমণি দেবী দেখেছিলেন শিবলিঙ্গ থেকে নির্গত একটি জ্যোতি তাঁর গর্ভে প্রবেশ করছে। তাঁর জন্মের আগে গয়ায় তাঁর বাবা বিষ্ণুকে স্বপ্নে দর্শন করেন।

পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমায় অবস্থিত কামারপুকুর গ্রামে ১৮৩৬ সালে এক দরিদ্র ধর্মনিষ্ঠ রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ পরিবারে রামকৃষ্ণ পরমহংসের জন্ম হয়। কামারপুকুরে তখন ধানের ক্ষেত, লম্বা-লম্বা তাল গাছ, রাজকীয় বটগাছ, কয়েকটি হ্রদ এবং দুটি শ্মশান ছিল। তিনি ছিলেন পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় এবং মা চন্দ্রমণি দেবীর চতুর্থ ও শেষ সন্তান। কথিত আছে, শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মের পূর্বে তাঁর পিতামাতার সম্মুখে বেশ কয়েকটি অলৌকিক ঘটনা ঘটেছিল। সন্তানসম্ভবা চন্দ্রমণি দেবী দেখেছিলেন শিবলিঙ্গ থেকে নির্গত একটি জ্যোতি তাঁর গর্ভে প্রবেশ করছে। তাঁর জন্মের অব্যবহিত পূর্বে গয়ায় তীর্থভ্রমণে গিয়ে ক্ষুদিরাম গদাধর বিষ্ণুকে স্বপ্নে দর্শন করেন। সেই কারণে তিনি নবজাতকের নাম রাখেন গদাধর।

রামকৃষ্ণ পরমহংস ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের গুরু তথা পথ প্রদর্শক। তিনি কালী দেবীর প্রগাঢ় ভক্ত ছিলেন। তাঁর জীবনে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে, যার মধ্যে জীবনকে সুখী করার সূত্র লুকিয়ে রয়েছে। এই সূত্রগুলিকে জীবনে প্রয়োগ করলে, আমাদের অনেক সমস্যা নির্মূল করা যেতে পারে। প্রচলিত ঘটনা অনুসারে, একদিন রামকৃষ্ণ পরমহংসের শিষ্য জিজ্ঞাসা করলেন যে, পার্থিব জিনিস পেতে এবং আকাঙ্ক্ষাগুলি পূরণে মানুষের মনে বিভ্রান্তি রয়েছে। মানুষ এই পার্থিব বাসনাগুলি পূরণ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। ঈশ্বরকে খুঁজতে এবং ভক্তি করতে কেন এমন কোনও বিচলন নেই?

Latest Videos

রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এর উত্তরে শিষ্যকে বলেছিলেন, ‘মানুষ অজ্ঞতার কারণে ভক্তির দিকে মনোযোগী হতে অক্ষম। লোকেরা পার্থিব বস্তু পেয়ে তাদের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করার চেষ্টা করে, তারা এগুলিকেই সমস্ত কিছু হিসাবে গ্রহণ করে। মুগ্ধতায় আটকা পড়ে ব্যক্তি ঈশ্বরের প্রতি মনোযোগী হতে অক্ষম।’ শিষ্য জিজ্ঞাসা করলেন কীভাবে এই আকাঙ্ক্ষা ও অভিলাষের বিভ্রান্তি এড়ানো যায়? ঠাকুর এর উত্তরে বলেছিলেন, 'কেবল পার্থিব এই বিষয়কেই ভোগ বলা হয়, যতক্ষণ না এই ভোগ শেষ হয়, ততক্ষণ আমাদের মন ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভক্তি নিবেদিত করতে সক্ষম হবে না। যখন কোনও শিশু খেলনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তখন সে তার মাকে স্মরণ করে না। যখন তার মন খেলনাতে পূর্ণ হয়, তার খেলার ইচ্ছা শেষ হয়, তখন সে তার মাকে স্মরণ করে। আমাদেরও একই অবস্থা। যতক্ষণ আমাদের মন পার্থিব বিষয়ের মত খেলনাগুলিতে থাকে, ততক্ষণ আমরা আমাদের মা, ঈশ্বরকেও স্মরণ করি না।'

ঈশ্বরকে পেতে, আমাদের ভোগ ত্যাগ করতে হবে। যাঁরা ভক্তি করতে চান, তাঁদের সমস্ত পার্থিব বাসনা ত্যাগ করতে হয়। যতক্ষণ আমরা এই বাসনাগুলিতে নিমগ্ন থাকি ততক্ষণ আমরা ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি করতে পারি না। যদি ইচ্ছা থাকে তবে পুজোর সময়ও একাগ্রতা তৈরি হবে না। মন ঘুরে বেড়াবে এবং ভক্তি থাকবে না।

Share this article
click me!

Latest Videos

Delhi-তে মেগা জনসভা Amit Shah-র, কী বার্তা দেখুন সরাসরি
ফের কবিতার মাধ্যমে মমতাকে বেলাগাম আক্রমণ রুদ্রনীলের, দেখুন ভিডিও | Rudranil Ghosh Poem
‘Bangladesh India-কে বেশি চুলকোতে আসবেন না!’ Yunus সরকারকে চরম হুঁশিয়ারি Suvendu Adhikari-র
Republic Day-তে চরম বিতর্ক! জাতীয় পতাকা উত্তোলনে বাঁধা RPF-এর, চাঞ্চল্য Nabadwip-এ
মারধর করে হিন্দুদের জমি দখলের চেষ্টা বিষ্ণুপুরে, গর্জে উঠলেন অগ্নিমিত্রা পাল | Hindu Attack