ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। একথা আমারা সকলে জানলেও মেনে চলি কতজন! গবেষণায় দেখা গেছে সিগারেটে নিকোটিন-সহ ৫৬টি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। ২০১০ এ প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বের ১৯২টি দেশে পরিচালিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিজে ধূমপান না করলেও পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে বিশ্ব জুড়ে প্রতি বছর প্রায় ৬,০০,০০০ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ১,৬৫,০০০ সংখ্যক শিশু। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে শিশুরা নিউমোনিয়া ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। ফলে ক্রমশ বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি। এছাড়া পরোক্ষ ধূমপানের কারণে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার সহ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগও দেখা দেয়। গবেষণায় এও বেরিয়ে এসেছে যে, পরোক্ষ ধূমপান পুরুষের তুলনায় নারীর উপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৮১,০০০ জন নারীর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন- খালি পেটে চা পান করেন, অজান্তেই মারাত্মক ক্ষতি করছেন নিজের
ধূমপান যে শুধু ক্যান্সারের প্রবণতা বৃদ্ধি করে তা নয় ধূমপান কেড়ে নিতে পারে আপনার দৃষ্টিশক্তিও। শুনতে অবাক লাগলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একদমই বাস্তব। একজন মানুষের পক্ষে দৃষ্টিহীন হয়ে বেঁচে থাকার সমস্যা কতটা, সেটা যারা ভুক্তভোগী তারাই জানেন। মার্কিন আই স্পেশালিস্টদের মতে, ধূমপানের সরাসরি প্রভাব পড়ে চোখের রেটিনার উপর। আর একমাত্র এই রেটিনার কারণেই আমরা দেখতে পাই। ধূমপানের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় চোখের সেই গুরুত্বপূর্ণ অংশটিই। আর ক্রমাগত রেটিনার ক্ষতির ফলেই দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলে মানুষ।
আরও পড়ুন- আলু খেলে কি সত্য়িই বেড়ে যায় ওজন, এই বিষয়ে কি বলছেন পুষ্টিবিদরা
ধূমপানের ফলে শুধু রেটিনাই ক্ষতিগ্রস্থ হয় না, চোখে ছানি পড়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। যারা অতিরিক্ত ধূমপান করেন তাঁদের চোখে ছাঁনি পড়ার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
এর ফলে হতে পারে ড্রাই আইজের মত সমস্যাও। ধূমপান যারা না করেন তাঁদের মধ্যেও ড্রাই আইজের মত সমস্যা দেখা যায়, তবে যারা ধূমপান করেন তাদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি।
আরও পড়ুন- প্লাস্টিক ব্যবহারের আগে জেনে নিন, অজান্তেই পরিবেশের কতটা ক্ষতি করছেন আপনি
এত গেল চোখের সমস্যা ধূমপানের ফলে চেহাড়ায়া দ্রুত ছাপ পড়ে বয়েসের। এর কারণ, ধূমপানের সরাসরি প্রভাব পড়ে ফুসফসে। যা প্রভাব ফেলে আপনার ত্বকে।
ধূমপানের ফলে দেখা দেয় ফার্টিলিটির সমস্যা। সেই সঙ্গে দেখা যায় হরমোনের সমস্যাও। ছেলেদের স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার সব থেকে বড় কারণ হল এই ধূমপান। মেয়েদের মধ্যেও ধূমপানের নেশা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনের পর দিন। এই কারণে মেয়েদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।