অদ্ভুদ Lifestyle, একটি মাত্র স্বপ্ন নিয়ে ১৭ বছর গাড়িতে বনবাসে এই মানুষটি

আদিম মানুষের মত গাছের কোটর বা গুহায় নয়। তিনি থাকেন তাঁকে সাধের অ্যাম্বাস্যাডর গাড়িতে। সেটিও দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে পার্ক করা হয়েছে জঙ্গলে। 

Saborni Mitra | Published : Oct 7, 2021 5:38 PM IST

অবিশাস্য হলেও ঘটনাটি সত্যি।  শহুরে আধুনিক জীবন তাই পছন্দ নয়। তাই শহর গ্রাম  ছেড়ে চলে গেছেন জঙ্গলে। সেখানেই রয়েছেন দীর্ঘ ১৭ বছর। তিনি চন্দ্রশেখর (handrasakar)। ৫৬ বছরের এই মানুষটি বর্তমানে রয়েছেন, কর্নাটকের (Karnataka) গভীর জঙ্গলে (Deep Forest)। দক্ষিণ কন্নড় জেলার সুলিয়ার আরান্থোদুরের কাছে আদলত ও নেকর নামে দুটি গ্রাম রয়েছে। দুটি গ্রামের মধ্যে গভীর জঙ্গলেই বাস করেন তিনি। তবে আদিম মানুষের মত গাছের কোটর বা গুহায় নয়। তিনি থাকেন তাঁকে সাধের অ্যাম্বাস্যাডর গাড়িতে। সেটিও দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে পার্ক করা হয়েছে জঙ্গলে। 

কঠিন সফরঃ 
চন্দ্রশেখরের গাড়ি বাড়িতে যাওয়া কিন্তু খুব একটা সহজ নয়। জঙ্গলের মধ্যে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার হেঁটতে হবে। তারপরই দেখা যাবে প্ল্যাস্টিকের সীমানা। সেখানে দাঁড়ালেই দেখা যাবে চন্দ্রশেখবের গাড়ি। পুরনো গাড়ি। অযত্ন আর অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। আধুনিক জীবনের কোনও চিহ্ন সেখানে নেই। কিন্তু রয়েছে একটি রেডিও। সেটি কুন্তু পুরোপুরি সচল। 

Drug Case: কেন আরিয়ান খান জামিন পেল না, আদালতে কী বলল NCB- রইল সব তথ্য

এক অন্য জীবনঃ
দীর্ঘ বনবাসের ছাপ স্পষ্ট চন্দ্রশেখরের শরীরে। মেদহীন দেহ। তবে অঙ্গগুলি রীতিমত শক্তিশালী। মাথার দীর্ঘদিনের চুল রয়েছে। তবে মাথার অর্ধেকটা জুড়ে রয়েছে টাক। দেহের উর্ধ্ব ও নিম্নঅঙ্গ ঢাকতে দুই টুকরো কাপড় রয়েছে শরীরে। আর এক জোড়া হাওয়াই চপ্পল। এভাবেই দিন কাটছে চন্দ্র শেখরের। 

'দয়া করে অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসটা দেখুন', কেন সাধারণের কাছে এমন আর্জি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের

কৃচ্ছসাধনের কারণঃ 
একটা সময় ১.৫ একর জমির একটি ফার্ম হাউস ছিল চন্দ্রশেখরের। সেথানে তিনি বাদাম চাষ করতেন। শান্তিপূর্ণ জীবন ছিল। ২০০৩ সালে তিনি সমবায় ব্যাংকে থেকে ৪০ হাজার টাকা লোন নিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও ঋণ পরিষোধ করতে পারেননি। ব্যাংকের তার ফার্ম হাউস নিলামে তোলে- এটাই তিনি মেনে নিতে পারেননি। তারপরই প্রিয় অ্যাম্বাস্যাডর করে চলে যান বোনের বাড়িতে। সেখানে কিছু দিন থাকার পরই পারিবারিক বিবাদ শুরু হয়। তারপরই সব ছেড়েছুড়ে সাধের গাড়ি নিয়ে চলে আসেন গভীর জঙ্গলে। সেখানেই থেকে যান তিনি। রোদ্দুর আর বর্ষা থেকে গাড়িই তাঁকে রক্ষা করে। প্রয়োজনে গাড়ির ওপর প্ল্যাস্টিক বিছিয়ে দেন তিনি। 

Supreme Court: শুক্রবারই লাখিমপুর খেরির হিংসার রিপোর্ট তলব, তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন শীর্ষ আদালতের

চন্দ্রশেখরের স্বপ্নঃ
এখনও স্বপ্ন দেখেন চন্দ্রশেখর। ইচ্ছে  একটাই- নিজের ফার্ম হাউস ফিরে পাওয়া। সেই লক্ষ্য়ে এখনও কাজ করেছেন তিনি। তিনি জঙ্গলের লতাপাতা সংগ্রহ করে নানান জিনিস তৈরি করেন। স্থানীয় গ্রামে তা বিক্রি করেন। ফার্ম হাউসের প্রয়োজনীয় দলিল আর নথি তিনি এখনও যত্নসহকারে রেখে দিয়েছেন তাঁর গাড়িতে। 

দিন কেটে যায়ঃ 
চন্দ্রশখরের দিন কাছে হাতের কাজ বিক্রির করে সামান্য যে টাকা পয়সা পান সেগুলি দিতেই চাল ডাল কেনেন তিনি। তারপর রয়েছে জঙ্গলের ফলপাকুড়। নদীর জলেই স্নান করেন তিনি। তার খবর পেয়ে স্থায়ীন জেলা শাসক চন্দ্রশেখরের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। চন্দ্রশেখরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনারও চেষ্টা করছেন তিনি। 

Share this article
click me!