বিশ্বব্যাপী নিম গাছ, গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর তা কিন্তু এর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য। নিম ছত্রাকনাশক হিসেবে, ব্যাকটেরিয়া রোধক হিসেবে, ভাইরাসরোধক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে, চ্যাগাস রোধ নিয়ন্ত্রণে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে, দন্ত চিকিৎসায় ব্যথামুক্তি ও জ্বর কমাতে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন- প্রিয়জনের ধূমপান বন্ধ করান, নানান শারীরিক সমস্যা সহ হারাতে হতে পারে দৃষ্টিশক্তিও
এই একটি ঔষধি গাছ যার ডাল, পাতা, রস সবই কাজে লাগে। নিম একটি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ বৃক্ষ। নিমের পাতা থেকে বর্তমানে প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকরী। নিমের কাঠ খুবই শক্ত। এই কাঠে কখনো ঘুণ ধরে না। পোকা বাসা বাঁধে না। উইপোকা খেতে পারে না। এই কারণে নিম কাঠের আসবাবপত্রও বর্তমানে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রাচীনকাল থেকেই বাদ্যযন্ত্র বানানোর জন্য কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও নিম পাতার রয়েছে বহুগুণ জেনে নিন সেগুলি কি কি-
আরও পড়ুন- অতিথিদের চমক দিতে, চটপট বানিয়ে নিন লোভনীয় শাহী তেল কই
ব্লাড সুগারের রোজ সকালে খালি পেটে ১৫ থেকে ২০ টি নিম পাতা চিবিয়ে খেলে উপকার হয়। এছাড়া ৫ থেকে ৬ চামচ নিমপাতার রস খেলে একই উপকার হয়।
জন্ম নিয়ন্ত্রণে নিম: নিম তেল শক্তিশালী শুক্রাণুনাশক হিসেবেও কাজ করে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, নিম তেল মহিলাদের জন্য নতুন ধরনের কার্যকরী গর্ভনিরোধক হতে পারে। এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুক্রানু মেরে ফেলতে সক্ষম।
আরও পড়ুন- আলু খেলে কি সত্য়িই বেড়ে যায় ওজন, এই বিষয়ে কি বলছেন পুষ্টিবিদরা
কফজনিত বুকের ব্যথা: অনেক সময় বুকে কফ জমে বুক ব্যথা করে। এ জন্য ৩০ ফোটা নিম পাতার রস সামান্য গরম জলে মিশিয়ে দিনে ৩-৪ বার খেলে বুকের ব্যথা কমে যায়। তবে গর্ভবতী মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এই উপযুক্ত নয়।
উকুন নাশ: চুলে উকুনের সমস্যা থাকলে নিম পাতার সাহায্যে তা কমানো যায়। নিমের পাতা বেটে হালকা করে মাথায় লাগিয়ে ঘন্টা খানেক পরে মাথা ধুয়ে ফেললে ২-৩ দিনের মধ্যে উকুন মরে যায়।
কৃমি: পেটে কৃমি হলে শিশুরা রোগা হয়ে যায়, সেই সঙ্গে পেট বড় হয়ে যায়। এই জন্য কিছুটা নিম গাছের মূলের ছালের গুঁড়ো দিনে ৩ বার সামান্য গরম জলে মিশিয়ে খেয়ে নিন। এর ফলে কৃমির সমস্যা ওষুধ ছাড়াই কমানো যায়।
অজীর্ণ: অনেকদিন ধরে পেটের অসুখ, বা সমস্যা থাকলে ৩০ ফোঁটা নিম পাতার রস অর্ধেক কাপ জলের সঙ্গে মিশিয়ে সকাল-বিকাল খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।
খোস পাচড়া: নিম পাতা সিদ্ধ জল দিয়ে স্নান করলে খোস-পাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি বা অ্যালার্জির মত সমস্যাও দূর হয়।
দাঁতের রোগ: নিমের পাতা ও ছালের গুঁড়ো কিংম্বা নিমের ছাল দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁত মজবুত হয়।