ঠাকুমার কাছেই মানুষ সবার প্রিয় ও হেনরি, জেলে বসেই লেখেন একের পর এক বিখ্য়াত গল্প

  •  ও হেনরির আসল নাম হল, উইলিয়াম সিডনি পোর্টার 
  • মানুষ হন ঠাকুমার কাছে,১৫ বছর বয়সে স্কুল ছাড়েন  
  • সেন্ট তছরুপের কারণে ৫ বছরের জন্য জেলে যান  
  • আর সেখানে বসেই  তিনি লেখালেখি চালাতে থাকেন 
     

ছদ্মনামেই ও হেনরি পরিচিত আর সে নামেই তিনি বিখ্যাত ছোটগল্পের ভুবনে। আসল নাম উইলিয়াম সিডনি পোর্টার। নিজেকে আড়াল করতে ছদ্মনামের আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিন বছর বয়সে পোর্টারের মা মারা যায়।  মানুষ হন ঠাকুমার কাছে। বাবাও ছিল না। ১৫ বছর বয়সে স্কুল ছাড়েন। এরপর ফার্মাসিস্ট হিসেবে একটা লাইসেন্স জোগাড় করেন। কিছুদিন পর ঠাকুমার পরিবারের সঙ্গে  টেক্সাসে চলে গেলেন তিনিও। 

আরও পড়ুন, ভূত-প্রেত নিয়ে খেলা করেন বিভূতিভূষণ, এই অপবাদ দিয়ে স্কুল থেকে তাড়ানো হয়েছিল তাঁকে

Latest Videos

এখানে এসে তিনি রিচার্ড হলের লা স্যালে কাউন্টিতে ভেড়া চরানোর কাজ নেন। কিছুদিন পর হয়ে যান পাঁচক। এরপর প্যারামবুরেটরে বাচ্চা বয়ে নিয়ে বেড়ানোর মতো কাজও করেন। এইসব কাজের ফাঁকে পোর্টার স্প্যানিশ ও জার্মন অভিবাসীদের সঙ্গে মেলসমেশার সুযোগ পান। সঙ্গে কিছু  নতুন পুরনো বই পড়বারও সুযোগ পান। এতে করে তার পোর্টারের ভেতরে অন্য ধরণের চিন্তা ভাবনা তৈরি হতে থাকে। বছরখানের পর এক বন্ধুর সঙ্গে চলে যান টেক্সাসের আর এক জায়গায়। সেখানে পোর্টারের সঙ্গে আলাপ হয় জোসেফ হ্যারলের এবং তিনি তার বাড়িতে তিন বছর থাকেন।

 


সেই শহরেও পোর্টার জুটিয়ে নেন ফার্মাসিস্টের কাজ। কাজের পর শহরের একদল বন্ধুর সঙ্গে আড্ডায় মেতে ওঠেন পোর্টার। বন্ধুরা প্রায়ই তার হাস্যরসের গল্প শুনে টেবিল চাপড়ে উঠত। তিনি গিটার ও ম্যান্ডোলীন বাজিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে তুলতেন। মাঝেমধ্যে তিনি গির্জায় তরুণ গায়কদলের সঙ্গে গান গাইতেন। এখানেই এ্যাথল ইস্টেটের সঙ্গে তার আলাপ ও পরে বিয়ে। এ্যাথল পোর্টারকে লিখতে ও গাইতে প্রেরণা যোগাতেন।

আরও পড়ুন, মহালয়ায় দক্ষিণেশ্বর মন্দির বন্ধ রাখার প্রস্তাব, চিঠি পাঠাল পুলিশ-প্রশাসন, দেখুন ছবি

এরপর পোর্টার মাসে একশো  ডলার মাইনের একটা চাকরি জুটিএ ফেলেন। তাতে তাদের দু’জনের ভালই চলছিল। কিন্তু কিছুদিন পর সেই কাজটি চলে যায়। সৌভাগ্যবশত পোর্টার ন্যাশনাল ব্যাংকে চাকরি পেয়ে যান। কিন্তু কিছুদিন পর হঠাৎ সেই ব্যাংক থেকে টাকা খোয়া যাওয়ার অভিযোগ উঠলে তিনি সেখানে তার চাকরি হারান। ব্যাংকে চাকরি করার সময়েই পোর্টার একটি ব্যঙ্গ-রসাত্মক পত্রিকা দ্য রোলিং স্টোন-এ কাজ করতেন। এবার তিনি সেখানে পুরোপুরি সময় দেওয়া শুরু করেন। এখানে কাজ করার সময়ই তিনি হিউস্টনের ‘হিউস্টন পোস্ট’-এর সম্পাদকদের নজরে আসেন। 

 

 

হিউস্টনে তিনি পরিবারসহ হোটেলে থাকতেন। খুব ক্লেশে জীবন চললেও বেশ কিছু ভাল লেখা এই সময় তিনি লিখেছিলেন। এদিকে ব্যাংকে টাকা খোয়া যাওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে পোর্টার গ্রেফতার হন। তাকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসতে তার শ্বশুরের সহযোগিতা নিতে হয়। কিন্তু ফের সেন্ট তছরুপের কারণে তাকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হয়। জেলে যান তিনি। 

আরও পড়ুন, সরকারের এই যোজনায় কি নাম রয়েছে আপনার, বিন্যামূল্যেই মিলবে ২০০০ টাকা


সেখানে বসেই তিনি লেখালেখি চালাতে থাকেন। বন্ধুরা তার লেখা বিভিন্ন ছদ্মনামে সংবাদপত্রে প্রকাশ করা শুরু করেন। এই সময় তিনি কম করে দশের বেশি ছদ্মোনামে বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতে লিখেছেন। জেলে তিনি রাতের ডাক্তার হিসেবে কাজ করতেন, যেহেতু তার ফার্মাসিস্টের ডিগ্রী ছিল। ও হেনরী ছদ্মোনামে ম্যাক ক্লিউর পত্রিকায় তার লেখা বিখ্যাত গল্প হুইসলিং ডিক’স ক্রিস্টমাস স্টকিংস্  প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি আর নাম বদল করেন নি। এরই কিছুদিন পরে জেলে তাঁর ভাল ব্যবহারের কারণে তিন বছর জেল খাটার পর তার সাঁজা মাফ হয়ে যায়। এরপর পেনসিলভানিয়ায় গিয়ে মেয়ে মার্গারেটের সঙ্গে থাকেন। মার্গারেটকে কখনো বলা হয়নি তার বাবা জেলে ছিলেন। তিনি জানতেন ব্যবসার কারণে তিনি বাইরে আছেন।

 

 

আরও পড়ুন, হার্ট অ্যাটাকের পরেও হার্ট থাকবে সুস্থ, প্রতিদিনের রুটিনে আনুন এই ৬ পরিবর্তন


প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর আস্থায় মানুষ যে তার স্বপ্নের কাছে পৌঁছাতে পারে, ও হেনরি সেটাই প্রমাণ করে গেছেন জীবনে। প্রায় ছশো গল্পের লেখক ও হেনিরির গল্পের বিষয়বস্তুর গভীরতা, শব্দের খেলা, নিখুঁত চরিত্রাংকন ও চমৎপ্রদ পরিসমাপ্তি  হল তাঁর গল্পের মূল সম্পদ।তাঁর গল্পগুলি নাগরিক জীবনের কথা, বিচিত্র পেশার মানুষ, জীবনের নানা দ্বন্দ্বসংঘাত, হাসিকান্নার। সব ধরণের মানুষ নিয়েই ও' হেনরি গল্প লিখেছেন। তবে তার গল্পের একটি অসাধারণ বিষয় হল তিনি কোনও মানুষকে কখনোই মন্দ মানুষ হিসেবে চিত্রিত করেননি। তার গল্পের পাত্রপাত্রীরা সবাই সাধারণ স্তরের মানুষ। এসব গল্পের নামধাম ও সময়টা বদলে নিলেই মনে হয় এরা আমাদের চারপাশেরই মানুষ।

 

 

Share this article
click me!

Latest Videos

Live: মথুরাপুরে সদস্যতা অভিযান অগ্নিমিত্রা পালের, দেখুন সরাসরি
Suvendu Adhikari Live: বিধানসভার বাইরে মুখোমুখি শুভেন্দু অধিকারী, দেখুন সরাসরি
'বালি চুরি, কয়লা চুরিতে যুক্ত পুলিশদের একাংশ' বিস্ফোরক মন্তব্য মমতার | Mamata Banerjee
উপনির্বাচনে (By Election) কেমন ফল করবে বিজেপি? দেখুন কী বললেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
হঠাৎ করে TMC নেতারা পুলিশের বিরুদ্ধে কেন? কী উদ্দেশ্যে? প্রশ্ন অগ্নিমিত্রার | Agnimitra Paul