ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নামের মধ্যেই ওপার বাংলা রয়েছে। ফলে এখনও বাংলাদেশের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে। ১০৪-তম প্রতিষ্ঠা দিবসে সেই বন্ধন দৃঢ় হল।
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতারা সবাই তৎকালীন পূর্ববঙ্গ থেকে কলকাতায় এসে স্থানীয়দের ব্যঙ্গ, অসম্মান, বঞ্চনার জবাব দিতে নিজেদের ক্লাব গড়েন। ১০৩ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও শিকড়ের কথা ভোলেননি ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের সঙ্গে এখনও লাল-হলুদের ঘনিষ্ঠ যোগ আছে। ন'য়ের দশকের গোড়ায় ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলতে এসেছিলেন মোনেম মুন্না, শেখ মহম্মদ আসলাম ও রিজভি করিম রুমি। তাঁদের মধ্যে সেরা পারফরম্যান্স ছিল মুন্নার। বাংলাদেশের এই ৩ ফুটবলারের কথা এখনও মনে আছে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। লাল-হলুদ কর্মকর্তারাও মুন্না, আসলাম, রুমিকে মনে রেখেছেন। এবারের প্রতিষ্ঠা দিবসে তাঁদের বিশেষ সম্মান জানানো হল।
মুন্না প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী ইয়াসমিন মোনেম ও পুত্র আজমান সালিদ ইস্টবেঙ্গলের ডাকে সাড়া দিয়ে কলকাতায় এসেছেন। আসলামও পুরনো ক্লাবের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রুমি কানাডায় থাকায় এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। মুন্নার স্ত্রী ও পুত্রকে 'আত্মজন স্মৃতি' এবং আসলামকে 'আত্মজন প্রীতি' সম্মান দেওয়া হয়। এবারই প্রথম এই সম্মান দেওয়া হল। বাংলাদেশের ক্লাব আবাহনী ক্রীড়াচক্রর পক্ষ থেকে লাল-হলুদের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আবাহনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তাদের সম্পর্ক খুব ভালো। আবাহনী থেকে একাধিক ফুটবলার ইস্টবেঙ্গলে এসেছেন। সেই সম্পর্ক এখনও বজায় আছে।
মুন্নার স্ত্রী এই সম্মান পেয়ে আপ্লুত। ইয়াসমিন বললেন, 'আমি এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করছি। আমি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে ১০৪-তম প্রতিষ্ঠা দিবসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমার তরফ থেকে এবং আমার পরিবারের তরফ থেকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সবাই মুন্নার জন্য প্রার্থনা করবেন।'
মুন্নার সঙ্গে খেলেছিলেন বিকাশ পাঁজি। তিনিও এদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন। সেই সময়ের তারকা স্ট্রাইকার শিশির ঘোষ মঞ্চে উঠে মুন্নার স্ত্রীকে সম্মান জানান। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসও মঞ্চে ছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের কর্মকর্তারাও ছিলেন।
'আত্মজন প্রীতি' সম্মান দেওয়া হয় বাংলাদেশের প্রাক্তন ফুটবলার মহম্মদ গোলাম ঘাউসকেও। এছাড়াও 'আত্মজন প্রীতি' সম্মান দেওয়া হয় বাংলাদেশের বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী মেহরিন মাহমুদ ও আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রাক্তন সভাপতি হারুনুর রশিদকে। বাংলাদেশ দূতাবাসের আধিকারিকরাও এই অনুষ্ঠানে ছিলেন। ফুটবলকে কেন্দ্র করে ২ বাংলার মিলনের সাক্ষী থাকল ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র।
বাংলাদেশের একাধিক দল আইএফএ শিল্ডে খেলে গিয়েছে। ডুরান্ড কাপ খেলতে এসেছে বাংলাদেশের একটি দল। ফলে ফুটবল ২ বাংলাকে একই সূত্রে বেঁধে রেখেছে।
আরও পড়ুন-
একজন ক্যান্সারে আক্রান্ত, অপরজন দৃষ্টিহীন, সমর্থকদের বিশেষ সম্মান ইস্টবেঙ্গলের
ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে রাজনীতির অনুপ্রবেশ, তাল কাটলেন অরূপ বিশ্বাস