কাঠমাণ্ডুর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে বাঙালি পর্বতারোহী পিয়ালি বসাকের। সেখান থেকে এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থার কথা জানালেন তিনি।
ফ্রস্টবাইট নিয়ে কাঠমাণ্ডুর হাসপাতালে ভর্তি বাঙালি পর্বতারোহী পিয়ালি বসাক। সেখান থেকেই এশিয়ানেট নিউজ বাংলার এডিটর দেবজ্যোতি চক্রবর্তীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থার কথা জানালেন এই বাঙালি পর্বতারোহী। আর্থিক সমস্যার জন্য সিটি স্ক্যান করাতে পারছেন না পিয়ালি। শুধু অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলেছেন, সম্পূর্ণ সুস্থ হতে ৬ মাসও লেগে যেতে পারে। চিকিৎসার জন্য কি রাজ্য সরকার কোনওভাবে সাহায্য করছে? পিয়ালি জানালেন, 'শ্যামল স্যার, কল্যাণ স্যার আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছেন। মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দেবেন বলেছেন। কাটমাণ্ডুতে এখন বিনা অর্থেই আমার চিকিৎসা করা হচ্ছে। আমি অনেকবার সামিট করতে নেপালে এসেছি বলে সবাই আমাকে চিনে গিয়েছেন। সবাই আমাকে ভালোবাসেন বলে এখনও চিকিৎসা করছেন। কিন্তু অনেক খরচ বলে স্ক্যান করাতে পারছি না। আমার অন্নপূর্ণা, মাকালু অভিযান মিলিয়ে ৩০ লক্ষ টাকার মতো দেনা হয়েছে। সেই টাকা মেটাতে হবে। আমার পরিবারের আর্থিক ক্ষমতা নেই। রাজ্য সরকারের কাছে আমার আবেদন, সরকার যেন আমার পাশে দাঁড়ায়। পশ্চিমবঙ্গের পিয়ালি বসাক হিসেবে আমার নাম এখন সারা বিশ্ব জানে। মুখ্যমন্ত্রী তো সবার পাশে দাঁড়ান। উনি যদি আমাকে সাহায্য করেন, তাহলে ভবিষ্যতে আরও সামিট করে রাজ্যের নাম উজ্জ্বল করতে পারব।'
কীভাবে ফ্রস্টবাইটে আক্রান্ত হলেন? পিয়ালি জানালেন, 'মাকালু জয় করার পথে আমার কোনও সমস্যা হয়নি। ভালোভাবেই নেমে আসছিলাম। নামার পথে আমি যেখানে আটকেছিলাম, সেখানে অন্য একটি এজেন্সির একজন মেম্বার বরফের ফাটলে পড়ে গিয়েছিল। সেখানে আর কেউ ছিল না। ও একাই পড়েছিল। ওকে তো আমরা ফেলে আসতে পারি না। আমরা দাঁড়িয়েছিলাম, শেরপারা ওকে তুলছিল। ও দাঁড়াতে পারছিল না। ওকে উদ্ধার করতে গিয়ে ৫-৬ ঘণ্টা দেরি হয়ে যায়। তার ফলেই আমি সমস্যায় পড়ি।'
পিয়ালি আরও জানালেন, ‘আমার স্নো গগলসে সমস্যা হচ্ছিল। তার ফলে আর কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না। শেরপাদের বলছিলাম, তোমরা আমাকে ধরে নিয়ে চলো। ওখানে তো চারদিকেই বিপদ। ১৬ তারিখ সন্ধে ৭টায় আমরা সামিটের জন্য বেরিয়েছিলাম। বেশিরভাগ সময়ই অক্সিজেন নিইনি। প্রচণ্ড হাওয়া দিচ্ছিল। তার ফলে সমস্যা হচ্ছিল। সামিটের কাছাকাছি গিয়ে অক্সিজেন নিতে হয়। স্নো গগলসটা আমি কিনেছিলাম কাঠমাণ্ডু থেকে। ওটা চোখে বড় হচ্ছিল। অক্সিজেন মাস্ক পরলে গগলস ঠিকমতো পরতে পারছিলাম না। তখন আমি গগলস খুলে ফেলি। তাতেই স্নো-ব্লাইন্ড হয়ে যাই। ১৭ তারিখ সকাল ৮টায় সামিট করে যখন নামছিলাম, তখন তুষারঝড় বেড়ে গিয়েছিল। আমরা ৪ জন একটা দড়ি কোমরে বেঁধে নিয়েছিলাম। না হলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তখনই অন্য একজনকে তুলতে গিয়ে দেরি হয়ে যায়। তার ফলে আমি সমস্যায় পড়ে যাই।’
আরও পড়ুন-
বিশ্বের পঞ্চম উচ্চতম শৃঙ্গ মাকালু জয়, নতুন নজির চন্দনগরের পিয়ালি বসাকের
৯ বছর পর আইপিএল ম্যাচ, নতুন করে সেজে উঠেছে ধরমশালা, দেখলে চোখ ফেরাতে পারবেন না!