পুরুলিয়ার ঝাড়খণ্ড সীমানার ব্লক ঝালদা ১ নম্বর ব্লক এবং তুলিন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সুবর্ণরেখা নদীর তীরে প্রতিবছর মকর সংক্রান্তির মেলা উপলক্ষ্যে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়। এই মেলায় ভিড় জমান বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দারা। গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পুরুলিয়ায় যেভাবে হু হু করে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে তার জন্যই মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শর্তসাপেক্ষে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela) এবং বীরভূমের জয়দেবের কেন্দুলি মেলার (Joydev Kenduli Mela) অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, পুরুলিয়ার (Purulia) ঝালদা সহ বিভিন্ন প্রান্তের মেলা পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জেলায় হু হু করে বাড়ছে করোনার (Corona) সংক্রমণ। প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। এই অবস্থায় মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হলে করোনার সংক্রমণ আরও বাড়বে। সেই কারণেই ঝালদা ১ নম্বর ব্লক এবং তুলিন গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে মাইকিং করে জানানো হয়েছে যে এ বছর বন্ধ থাকবে মকর মেলা। গত দুই-তিন দিন ধরেই এই ঘোষণা চলছে এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে। আগামীকাল মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে সকাল থেকেই সুবর্ণরেখা নদীর তীরে মেলা বসে। তাই আজ সকাল থেকে দিনভর মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে মাইকিং করে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে যে আগামীকাল মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে সুবর্ণরেখা নদীর তীরে কোনও মেলা বসবে না।
পুরুলিয়ার ঝাড়খণ্ড সীমানার ব্লক ঝালদা ১ নম্বর ব্লক এবং তুলিন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সুবর্ণরেখা নদীর তীরে প্রতিবছর মকর সংক্রান্তির মেলা উপলক্ষ্যে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয়। এই মেলায় ভিড় জমান বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দারা। গোটা রাজ্যের পাশাপাশি পুরুলিয়ায় যেভাবে হু হু করে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে তার জন্যই মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ঝালদা ১ নম্বর ব্লক প্রশাসন। তবে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে করোনা বিধি মেনে সুবর্ণরেখা নদীতে পুণ্য স্নান করতে পুণ্যার্থীদের কোনও বাধা নেই বলেও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে উপচে পড়া ভিড় গঙ্গাসাগরে, ভোর থেকেই চলল স্নান-পুজো
আরও পড়ুন- আশঙ্কা সত্যি করে গঙ্গাসাগরই কী হচ্ছে সুপার স্প্রেডার, ভিড় বাড়াচ্ছে চিন্তা
রাঙামাটির জেলা পুরুলিয়ায় পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি মানে টুসু পরব আর মাঠে-ঘাটে মেলা। পুরুলিয়া শহর লাগোয়া কাঁসাই নদী বা পুঞ্চা মানবাজার ব্লকের শিলাই বা কুমারী নদীর তীরে বসে মেলা। কোথাও তিন দিন কোথাও বা এক সপ্তাহ ধরে চলে মেলা। কিন্তু, হঠাৎ করেই করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের দাপটে নাজেহাল পুরুলিয়া জেলা। তাই সেখানকার ঐতিহ্যবাহী মকর সংক্রান্তি বা টুসু পরবেও পড়েছে করোনার কোপ। আর তাই করোনা সংক্রমণের উপর রাশ টানতে মেলা পুরোপুরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন- মোবাইলে বুঁদ বর্তমান প্রজন্ম, ধুঁকতে বসেছে পুরুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী টুসু উৎসব
এদিকে মকর সংক্রান্তি বা টুসু পরবের (Tusu Festival) মেলা বন্ধ হয়ে গেলেও। আজ শেষ মুহূর্তে পুরুলিয়া শহরের বড় হাটে শেষ মুহূর্তে টুসুর চৌডল বিক্রি করতে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেল শিল্পীদের। আজ শেষ দিনে চৌডল বিক্রি করতে এসে আশায় থেকেও অনেকে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন। কারণ বাজারে এর চাহিদা এবার প্রায় নেই বললেই চলে। শিল্পীদের দাবি, একদিকে করোনার দাপট অন্যদিকে অকাল বর্ষণে তৈরি হয়েছে সমস্যা। চৌডলের পসরা সাজিয়ে বসলেও বিক্রি নেই। আবার দু-একটি বিক্রি হলেও ঠিক মতো দাম নেই। সব মিলিয়ে এবার করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের দাপটে জেলার ঐতিহ্যবাহী মকর সংক্রান্তি থেকে শুরু করে টুসু পরব এবং টুসুর সাঁজোয়া ঘর চৌডল সবই বড়ই ফিকে।