বুধবার সকালে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘এখনও অনেক কিছুই বাকি রয়েছে দেখার। অনেকেই গ্রেফতার হবেন। কেউ পার পাবেন না।’
রাজ্যের শিক্ষা দফতরে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা দিয়ে দিয়েছে সিবিআই। চার্জশিটে উল্লেখ করা রয়েছে ১২ জনের নাম। উল্লেখযোগ্যভাবে, সেই তালিকায় নাম নেই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এই চার্জশিট নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে আবার বিঁধলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ২৬ অক্টোবর, বুধবার সকালে নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ ঘোষ। তখনই রাজ্যের শাসকদলের অন্দরে আরও গ্রেফতারি নিয়ে ভবিষ্যদ্বানী করেছেন তিনি। তাঁর তির্যক মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে জলঘোলা। তাহলে কি নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন আরও বড় মাথা? কাদের গ্রেফতারির পথে এগোচ্ছে তদন্ত? এবং বিজেপির সহ সভাপতিই বা খোঁজ পেলেন কীভাবে? সাধারণ মানুষের মনে উঠছে প্রশ্ন।
রাজ্যে দুর্নীতি নিয়ে বেশ বিপর্যস্ত শাসকশিবির। একদিকে যেমন বীরভূমে গরু পাচার কাণ্ডে জড়িত হয়ে গ্রেফতার হয়ে গিয়েছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, অন্যদিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর তাঁর সূত্র ধরে তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, পর্ষদের একাধিক শীর্ষ আধিকারিকরা বর্তমানে সিবিআই, ইডির চক্রে পরে জেরাপর্বে নাস্তানাবুদ। তাঁদের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। নবম ও দশম শ্রেণীর নিয়োগের মামলায় চার্জশিটে নাম রয়েছে মোট ১২ জনের। যদিও, গতকালের এই চার্জশিটে নাম নেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁকে অবশ্য সিবিআই গ্রেফতার করেছে গ্রুপ-সি মামলায়। তবে, এটি সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে দাখিল করা একেবারে প্রথম চার্জশিট।
২৫ অক্টোবর, মঙ্গলবার, সিবিআই যে চার্জশিট পেশ করেছে, সেই তালিকায় নাম রয়েছে, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, প্রসন্ন রায়, প্রদীপ সিং, ইমাম মোমিন, অশোক সাহা, পর্ণা বসু, সমরজিৎ আচার্য, জুঁই দাস, আজাদ আলি মির্জা এবং রোহিত কুমার ঝাঁ-এর। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আগামী পর্বে দাখিল করা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে, কারণ, শিক্ষা দফতরে দুর্নীতির সময়ে তিনিই বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। চার্জশিটে উল্লিখিত ১২ জনের মধ্যে ৬ জন এসএসসি-র সঙ্গে সরাসরি জড়িত রয়েছেন বলে দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। বাকি ৬ জন এসএসসি-র সঙ্গে জড়িত নন বলে উল্লেখ করা রয়েছে।
এই দুর্নীতি প্রসঙ্গেই গতকাল অনুব্রত মণ্ডলের উদ্দেশ্যে কালীপুজো করা নিয়ে খোঁচা দিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা মেদিনীপুর লোকসভার সাংসদ দিলীপ ঘোষ। বরাবরের মতো আজও প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে ঘাসফুল শিবিরকে বাক্যবাণে বিঁধলেন তিনি। নিউটাউনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বুধবার সকালে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘এখনও অনেক কিছুই বাকি রয়েছে দেখার। অনেকেই গ্রেফতার হবেন। কেউ পার পাবেন না। এই দুর্নীতিতে অনেক বড় বড় লোক যুক্ত আছে। পালিয়ে কেউ বাঁচবে না।’ এরপর ভাটাপাড়ায় ক্রমাগত তাজা বোমা উদ্ধার, কিশোরের মৃত্যু এবং গোলাগুলি চলার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করতেই শাসকদল এই ধরনের কাজ করছে।’
আরও পড়ুন-
পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে আসছে অরভিন্দ কেজরিওয়ালের দল, জেলায় জেলায় দফতর খুলছে ‘আপ’
ব্যস্ত সময়ে হঠাতই থমকে গেল হোয়াটসঅ্যাপ! মিনিট কয়েকের মধ্যে বিপাকে পড়লেন ১১ হাজার ব্যবহারকারী
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এর এলোমেলো গতিবিধিতে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ, সারা দেশজুড়ে প্রচুর প্রাণহানি!