কাশ্মীর প্রসঙ্গে সরকারকে কোণঠাসা করতে গিয়ে এবার দলের অস্বস্তি বাড়ালেন তৃণমূলনেত্রী। দিলীপ ঘোষের কাশ্মীর নিয়ে প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়লেন মমতা।
সকালে টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসে কাশ্মীর নিয়ে মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। সভামঞ্চ থেকে মমতা বলেন,কাশ্মীরে কী হচ্ছে কেউ জানতে পারছে না। এমনকী সংবাদমাধ্যমকেও সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেখানকার খবর করতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে তৃণমূল কংগ্রেস কাশ্মীরের পাশে থাকবে। যদিও দুপুর গড়াতেই মমতার এই মন্তব্য়ের পাল্টা দেন বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সংবাদমাধ্য়মের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপবাবু বলেন,'মিডিয়াই তো কাশ্মীর নিয়ে দেখাচ্ছে। সারা দুনিয়ার কাশ্মীর নিয়ে বক্তব্য এমনকী পাকিস্তান নিয়েও সব তুলে ধরেছে। আমরা কাশ্মীর নিয়ে মমতা ব্য়ানার্জির বক্তব্য শুনতে চাই। উনি ৩৭০ ধারার পক্ষে না বিপক্ষে? এটা আগে পরিষ্কার করে বলুন।'
আরও পড়ুন :তৈরি হচ্ছে বিকাশের নীল নকশা! কাশ্মীরের জন্য মোদী গড়লেন পঞ্চপাণ্ডবের দল
রাজ্য় রাজনৈতিক মহলের মতে,মমতাকে সরাসরি এই প্রশ্ন করে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলেছেন দিলীপ। কারণ দীর্ঘদিন কেটে গেলেও জম্মু-কাশ্মীরে মোদী সরকারের ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি নিয়ে মুখ খোলেননি মমতা। এর আগে অমিত শাহ ৩৭০ ধারা বিলোপের পথে হাঁটলে সংসদে ভোটাভুটি থেকেও বিরত থাকে তৃণমূল। ভোটাভুটির আগেই
সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুদীপবাবু বলেন,যে পদ্ধতিতে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের পথে সরকার হেঁটেছে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য় নয়। যদিও তাঁরা ৩৭০ বিলোপের পক্ষে না বিপক্ষে তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট বার্তা দেননি তৃণমূল নেত্রী। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মমতা বলেন, ওয়াকআউট মানে তারা বিল পাশ করাতে সরকারের সুবিধা করে দিয়েছেন এমনটা নয়।
যদিও রাজনীতির কারবারীরা বলছেন অন্য় কথা। তাঁদের মতে,মোদীর ঘোর বিরোধী কেজরিওয়ালও সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। পাশে দাঁড়িয়েছে বিএসপি। সরাসরি ৩৭০ ধারা বিলোপের পক্ষে গেলে তাই সমস্যা রয়েছে মমতার। সেক্ষেত্রে মমতাকে দেশবিরোধী তকমা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে চাইবে বিরোধীরা। রাজ্যে আগামী ভোটে যার ফসল তুলবে বিজেপি। উল্টো দিকে কাশ্মীর ইস্য়ুতে সরকার বিরোধিতা না করলে হাতছাড়া হতে পারে রাজ্য়ের সংখ্যালঘু ভোট। সেদিকে নজর রেখেই আপাতত ৩৭০ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছে না তৃণমূল।
আরও পড়ুন :খুনের হুমকি, দিলীপের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা পুলিশের
আরও পড়ুন :প্রাপ্তীর তালিকায় এবার ৫৫ লক্ষের বাড়ি! রাণু মন্ডলের গানে মুগ্ধ সলমন খান, দিলেন উপহার
এর আগেও ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার এবং জম্মু কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার বিরোধিতা করেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, 'কাশ্মীরীদের ও সেখানকার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে,এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারত সরকার। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কোনও ভোট বা আলোচনা করা হয়নি। এটা গণতন্ত্র নয়। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করি।' সম্প্রতি জম্মু কাশ্মীরকে পুনর্গঠন করতে লোকসভায় প্রস্তাব পাশ করান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরকে একটি বিধানসভাযুক্ত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও লাদাখকে বিধানসভাহীন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বীকৃতি দেয় সরকার।