
বুধবার সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা মধ্যে মাল নদীতে ছিল বিসর্জনের ভিড়। সেই সময়ই মাল নদীতে আসে হড়পা বান। দুর্ঘটনার ১২ ঘন্টা পরে টুইট করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন তিনি। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকার, সেই বার্তা দেন তিনি। তিনি টুইট করে লেখেন মাল নদীতে যে মর্মান্তিক বন্যার ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ৮জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের পরিবার যেন এই কঠিন সময়ে শক্তি পায়।
মমতা আরও বলেছেন ১৩ জন হাসপাতালে ভর্তি, তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন তিনি। এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এর অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে। পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স স্বেচ্ছাসেবক এবং স্থানীয় যুবকদের প্রচেষ্টায় প্রায় ৭০ জনকে রক্ষা করা হয়েছে। তাদের নিঃস্বার্থ সেবার প্রশংসা করেছেন মমতা। এখন পর্যন্ত নিখোঁজদের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এই টুইটবার্তার সঙ্গেই ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন মৃতের পরিবার প্রতি ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। যেকোনো সহায়তার জন্য নিম্নলিখিত হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে যোগাযোগ করার বার্তা দিয়েছেন মমতা। সেই সঙ্গে দুটি নম্বর দিয়েছেন- 03561230780 / 9073936815। তাঁর আহ্বান এই দুঃসময়ে যেন সকলে সবার পাশে দাঁড়ায়।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে দুর্গা পুজোর সময় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানান হয়েছে নিতহদের পরিবারের প্রতি তিনি সমবেদনা জানিয়েছেন। রাতেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে টুইট করা হয়।
এদিকে, মাল নদীর তীরে মোতায়েন থাকা এক সিভিল ডিফেন্সের এক সদস্যের কথায়, ২০ মিনিট ধরে জল বাড়ছিল। আচমকাই এভাবে জলের স্তর বেড়ে যাওয়ায় মাইকিং করার অনুরোধ তারা করেছিলেন। বিসর্জনের জন্য যে সব সরকারি আধিকারিক দায়িত্বে ছিলেন মাল নদীর তীরে। তাদেরকেই নাকি সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা বলেছিলেন মাইকে অ্যানাউন্স করতে এবং মানুষকে নদী বক্ষ ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে। কিন্তু সেই অনুরোধ রক্ষাই করা হয়নি। ওই সিভিল ডিফেন্সের কর্মী আরও জানিয়েছেন যে বিসর্জনের জন্য তাদের সংগঠন থেকে মাত্র ৮ জনকে মোতায়েন করা হয়েছিল। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য দেওয়া হয়েছিল শুধু দড়ি।
বিসর্জন চলাকালীন রাত সাড়ে ৮টায় হড়পা বান ব্যাপক আকার নেয়। আর তাতে মুহূর্তে ভেসে যান অসংখ্য মানুষ। ভোর রাত পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ১৬। ৫০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪০ জন নদীর মাঝে একটি উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিল। হাসপাতালে ১৫ জন ভর্তি রয়েছেন। এরা জলে ভেসে আসা পাথরের ধাক্কায় জখম হয়েছেন।
আরও পড়ুন-
২০ মিনিট ধরে বাড়ছিল জল, দড়ি নিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা ছিল অসম্ভব, মালবাজার হড়পা বানে চাঞ্চল্যকর তথ্য
মাল নদীর 'রাক্ষুসে' জল স্রোত গিলে খেল দাদুকে, প্রৌঢ়ের তৎপরতায় বাঁচল ছোট্ট নাতি
বিসর্জনে বিষাদ! হড়পা বানে তলিয়ে মৃত ৭, শোক প্রকাশ প্রধানমন্ত্রী মোদীর