যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যু নিয়ে উত্তাল বিধানসভার প্রথম দিনের অধিবেশন। ব্রাত্য বসু ছাত্র মৃত্যু নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন রাজ্যপালকে। শুভেন্দুর অধিকার দায়ী রাজ্য।
আগেই শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, মঙ্গলবার বিধানসভায় বুঝে নেবেন। সেইমত এদিন দিনই রাজ্য বিধানসভায় বিধানসভার অধিবেশন প্রথম দিনই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যু নিয়ে বিতণ্ডায় জড়ালেন ব্রাত্য বসু ও শুভেন্দু অধিকারী। এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ছাত্র মৃত্যুর জন্য সরাসরি দায়ী করলেন রাজ্য সরকারকে। পাল্টা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর ছাত্র মৃত্যুর জন্য দায়ী করেল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দেশ বিরোধী শক্তির ঘাঁট। সেখানে মাদক পাচার হয়। ব়্যাগিং হয়। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থানা কোনও ব্যবস্থা নেয় না। পাল্টা জবাব দিতে উঠে ব্রাত্য বসু বলেন, মাদক পাচার রোখার জন্য নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো রয়েছে। পাল্টা বিজেপি বিধায়করা হৈহৈ করে উঠে। তারা বলে রাজ্যের হাতেও সংস্থা রয়েছে। এই সময়ই অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তারপরই শুভেন্দু বলেন বিচারপতি মঞ্জুল চেল্লুর সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী সিসিটিভি লাগাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে তার সময়ই দেওয়া হয়নি। শুভেন্দুর প্রশ্ন, 'কেন তাঁকে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সরানো হল?'
পাল্টা ব্রাত্য বসুর বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব়্যাগিং হচ্ছে। তিনি ২০০৯ সালের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, রাঘবন কিমিটির রিপোর্টের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, রাজ্যপাল ইচ্ছেতম উপাচার্য নিয়োগ করলেন। উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার পরই যাদবপুরে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার জন্য ব্রাত্য বসু রাজ্যপালকেই ১০০ শতাংশ দায়ী করেছেন।
'নিয়মিত মাছ খান আর ঐশ্বর্য রাইয়ের মত সুন্দর চোখ পান', মন্ত্রী উবাচ
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা যখন ঘটে তখন সেখানে কোনও উপাচার্য বা অস্থায়ী উপাচার্য দায়িত্বে ছিলেন না। যা নিয়ে আগেই রাজ্য রাজ্যপালকে দায়ী করেছিল। এদিন বিধানসভায় আবারও ব্রাত্য বসু দায়ী করলেন সিভি আনন্দ বোসকে। তবে এদিন শিক্ষামন্ত্রীর জবাবের মাঝেই অসন্তোষ প্রকাশ করে অধিবেশন থেকে অয়াকআউট করে বিজেপির বিধায়করা।
১লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গ দিবস, রাজ্যপালের উল্টো পথে হেঁটে বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করতে তৎপর রাজ্য সরকার
নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা স্বপ্নদীপ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল। হোস্টেলে আসার দিন রাতে মেন হোস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে যায়। দ্রুত উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই তাঁকে কেপিসি হাসপাতালে নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপের। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ৯ অগাস্ট অর্থাৎ বুধবার তিনি রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ হোস্টেলের নিচে ছিলেন। ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতে পান। ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তখনই দেখতে পান স্বপ্নদীপ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দ্রুত সেখানে প্রচুর ছাত্র উপস্থিত হয়। তারা সকলে মিলে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রকে উদ্ধার করে। নিয়ে যায় হাসপাতালে। দ্রুত চিকিৎসাও শুরু হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে। পরের দিন সকালে স্বপ্নদীপের মৃত্যু হয়। ঘটনার তদন্তে নেমেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। ব়্যাগিংএর কারণে স্বপ্নদীপকে হত্যা করা হয়েছে বলেও মনে করেছে তদন্তকারীরা। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত ১০জনেরও বেশি আটক করা হয়েছে। সকলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বা প্রাক্তন ছাত্র। তবে প্রাক্তন ছাত্ররা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।