৪৩ বছর আগে কেনা শেয়ারের মূল্য কোটি কোটি টাকা, কিন্তু খালি হতেই ফিরতে হচ্ছে বৃদ্ধকে

 ১৯৭৮ সালে ভালবি তাঁর চার আত্মীয় সঙ্গে উদয়পুরের মেওয়ার অয়েল অ্যান্ড জেলনারেল মিলস লিমিটেডের প্রায় ৩৫০০ টি শেয়ার কিনেছিলেন। সাড়ে তিন হাজার শেয়ার কেনায় সংস্থার ২.৮ শতাংশের শেয়ার হোল্ডার হয়ে যান তিনি।
 

Asianet News Bangla | Published : Sep 19, 2021 12:54 PM IST

একেই বোধহয় বলে ভাগ্যের পরিহাস। কোটি কোটি টাকার মালিক। কিন্তু সেই টাকা তিনি বা তাঁর পরিবারে কেউ দেখতে পাচ্ছেন না। পাশাপাশি সেই টাকার জন্য বারবার দাবি জানিয়েও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। কেরলের কোটির বাসিন্দা বাবু জর্জ ভালবিব একজন স্বল্পকালীন বিনিয়োগকারী। বন্ধুর ব্যবসায় শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিলেন। সেই টাকা বাড়তে বাড়তে কোটি কোটি টাকা হয়েছে বর্তমান মূল্য। কিন্তু সেই সংস্থা এক বিনিয়োগকারীর পরিচয়ই অস্বীকার করায় রীতিমত নাজেহাল অবস্থা ৭৪ বছর বসয়ী বাবু জর্জের। 

নিজেকে শেয়ারের ন্যায্য মালিক প্রমাণ করতে কালঘাম ছুটছে ৭৪ বছর বয়সী বৃদ্ধের। ঘটনার সূত্রপাত আজ থেকে ৪৩ বছর আগে। ১৯৭৮ সালে ভালবি তাঁর চার আত্মীয় সঙ্গে উদয়পুরের মেওয়ার অয়েল অ্যান্ড জেলনারেল মিলস লিমিটেডের প্রায় ৩৫০০ টি শেয়ার কিনেছিলেন। ভালবি ৭০ ও ৮০ দশকে ওই কোম্পানির পরিবেশক ছিলেন। সাড়ে তিন হাজার শেয়ার কেনায় সংস্থার ২.৮ শতাংশের শেয়ার হোল্ডার হয়ে যান তিনি। বন্ধুত্ব তৈরি হয় সংস্থার চেয়ারম্যান পিপি সিংহলের সঙ্গে। সংস্থাটি তালিকাভুক্ত ছিল না। তাঁর কোনও লভ্যাংশ প্রদান করেনি। 

সিধুর পিছনে থেকে ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কারিগর, সুখজিন্দরই হতে পারেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী

কিন্তু ধীরে ধীরে ভালবির পরিবার সেই শেয়ারের কথা ভুলে যায়। কিছুটা স্মৃতির অতলে চলে যায় সাড়ে তিন হাজার শেয়ারের কথা। কিন্তু ২০১৫ সালে পারিবারিক প্রয়োজনে কিছু পুরনো নথিপত্র ঘাঁটতে হয় পরিবারকে। সেই সময়ই সামনে আসে ৪৩ বছর পুরনো নথিপত্র। তাতে মাথায় হাত পড়ে গোটা পরিবারের। তখনই তারা সেই সংস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর শুরু করেন।  জানতে পারেন মেওয়াড় অয়েল অ্যান্ড জেনারেল মিলস লিমিটেড বর্তমানে নাম পরিবর্তন করেছে। এখন নাম পিআই ইন্ডাস্ট্রিড। এটি এখন তালিভুক্ত কোম্পনি। আর্থিকভাবেও ফুলে ফেঁপে উঠেছে সংস্থাটি। সবকিছু খতিয়ে দেখে ভালবি শেয়ারের দাবি জানান। শেয়ারগুলি ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সংস্থার কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। 

ভিন ধর্মের সহকর্মীর সঙ্গে বাইক সফর, মহিলাকে মারধর করে স্বামীকে 'নপুংসক' বলে আক্রমণ

সেই সংস্থার কর্তাদের পক্ষ থেকে ভালবির পরিবারকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তারা আর স্টেকহোল্ডার নয়। ১৯৮৯ সালে তাদের শেয়ারগুলি অন্যদের বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তারপরই ভালবির পরিবারের অভিযোগ পিআই ইন্ডস্ট্রিজ ডুপ্লিকেট শেয়ার ব্যবহার করে অন্যদের কাছে অবৈধভাবে শেয়ার বিক্রি করেছে। ২০১৬ সালে সংস্থাটি ভালবিকে দিল্লিতে আলোচনার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু তিনি তা প্রত্যাক্ষাণ করেন। তাঁর দাবি সংস্থাটি অবৈধভাবে জাল শেয়ার বিক্রি করেছে। 

সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেই পদত্যাগ ক্যাপ্টেনের, ঠিক কী কী লিখেছিলেন অমরিন্দর সিং

কিন্তু পুরো ঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। এরপর সংস্থাটি কেরলে ভালবি পরিবারের কাছে দুজন বিশেষজ্ঞকে পাঠায় শেয়ারের নথিপত্র পরীক্ষা করার জন্য। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন নথিগুলি সবই আসল। কিন্তু কোম্পানির এখনও পর্যন্ত কোনও যোগাযোগ করা হয়নি। ভালবি জানিয়েছেন তাঁর ও তাঁর পরিবারের মালিকানাধীন মূল অংশের ভিত্তিতে পিআই ইন্ডাস্ট্রিতে ৪২.৮ লক্ষ শেয়ার থাকা উচিৎ। এই শেয়ারের বর্তমানে বাজারমূল্য ১৪৪৮ কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন যে ১৩ জন শেয়ার কিনেছিল তারা সকলেই মালিকের কাছের মানুষ ছিল। তাই নিজের লোকের মধ্যেই সেই শেযার বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলে সেবিতেও তিনি গিয়েছিলেন। কিন্তু সংস্থাটি আসল নথিপত্র দিতে অস্বীকার করছে। তাই সমস্যা আরও জটিল হচ্ছে। 

Share this article
click me!