মুর্শিদাবাদে জমিদারবাড়ির সম্প্রীতির শারদীয়াকে ঘিরে উন্মাদনা চরমে। 'মুসলিমরাও এই পুজোয় সহযোগিতা করে আসছেন', জানালেন বর্ষীয়ান সদস্য কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী মাধব কুমার সান্যাল।
মুর্শিদাবাদে জমিদারবাড়ির (Zamindar House of Murshidabad) সম্প্রীতির শারদীয়াকে (Durga Puja 2021) ঘিরে উন্মাদনা চরমে।২০০ বছরের কাছাকাছি গ্রামীণ এই পুজাকে ঘিরে শুরু হয়েছে সাজসাজ রব। মায়ের পুজোয় ছাগল বলির প্রথা আগে চালু থাকলেও বর্তমানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিয়মরক্ষায় এখনও অষ্টমীতে নরনারায়ণ ভোজের আয়োজন হয়। 'মুসলিমরাও এই পুজোয় সহযোগিতা করে আসছেন', জানালেন বর্ষীয়ান সদস্য (Kolkata High Court) কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী মাধব কুমার সান্যাল।
মায়ের পুজোয় ছাগল বলির প্রথা
আরও পড়ুন, Durga Puja2021: ছৌ শিল্পের আদলে ৩ সেমি অভিনব দুর্গা বানিয়ে তাক লাগালেন বাঁকুড়ার শিল্পী
দুই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রতির আবহ বজায় রেখে শতাব্দী প্রাচীন মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী ভাতশালা এলাকার সান্যাল বাড়ির দুর্গা পূজাকে ঘিরে উৎসাহ উদ্দীপনায় ভাটা পড়েনি আজও। ২০০ বছরের কাছাকাছি গ্রামীণ এই পুজাকে ঘিরে শুরু হয়েছে সাজসাজ রব। তৎকালীন ইংরেজ আমলের সময় থেকে বনেদি জমিদার বাড়ির এঈ সূচনা পুজোর। তখন মায়ের পুজোয় ছাগল বলি দেওয়া হত। বর্তমানে সেই রীতি বন্ধ হয়েছে। মাঝে বদলে গিয়েছে বহু কিছু।দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শিকারপুরের জমিদার বাড়ির সদস্যরা পাততারি গুটিয়ে ভাতশালায় উঠে আসেন। জানা যায়, তখন থেকেই মায়ের পুজোয় ছাগল বলির প্রথা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
'মুসলিমরাও পুজোয় সাহায্য করে আসছেন'
ওই বাড়ির বর্ষীয়ান সদস্য কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী বারাসতের বাসিন্দা মাধব কুমার সান্যাল তার বাড়ির পুজো সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বলেন,'এই জমিদার বাড়ির পুজোর পরতে পরতে নিয়মনিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত রয়েছে বহু অজানা ইতিহাস।সান্যাল বাড়ির পুজো শুধু পারিবারিক নয়। জমিদার আমলে প্রজাদের চাহিদা মেটাতেই এই পুজোর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। তখনকার দিনে মুসলিমরাও ওই পুজোয় সহযোগিতা করে আসছেন। আজও তার বদল হয়নি ।' পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা জানান, যদিও সেই সময় পুজো প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হত। হত নরনারায়ণ ভোজ। এখন জমিদারি নেই। নেই প্রজাদের দাবিদাওয়াও। তা সত্ত্বেও পুজোর নিয়মে ছেদ পড়েনি এতটুকু। নিয়মরক্ষায় এখনও অষ্টমীতে নরনারায়ণ ভোজের আয়োজন হয়।
'এখনও কুমোরটুলির শিল্পী দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করা হয়'
এখনও কুমোরটুলির শিল্পী দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করা হয়। যার সূচনা করেছিলেন বাড়িরই সেজো ছেলে দমদম নাগেরবাজারের বাসিন্দা প্রয়াত চিকিৎসক সাধন কুমার সান্যাল। ওই রীতি আজও চলছে। পুজোর শুরু থেকে বংশের কোনও সদস্য চণ্ডীপাঠ করতেন। এক সময় চণ্ডীপাঠ করতেন জমিদার সুধীরকুমার সান্যাল ঠাকুর। বর্তমানে ওই পরিবারেরই মেয়ে বন্দনা সান্যাল ঠাকুরের কাঁধেই গুরুদায়িত্ব। প্রতি বছর পুজোয় চণ্ডীপাঠের টানেই ছেলেমেয়েদের নিয়ে তিনি ভাতশালায় আসেন। গত বছর যদিও করোনার জেরে বাড়ির পুজোয় যোগ দিতে পারেননি তিনি। সান্যাল বাড়ির পুজোয় এবার অংশ নেবেন পরিবারের তারকা কন্যা দেবদৃতাও। সদ্যই বিনোদুনিয়ায় কাজ শুরু করেছেন তিনি। তাই এবারের দুর্গাপুজো আরও বেশি জমজমাট হবে বলেই আশা পরিবারের সদস্যদের। সব মিলিয়ে জমে উঠেছে মুর্শিদাবাদের এই সম্পত্তির ভাতশালার দুর্গাপূজা।
আরও দেখুন, বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে