সত্যিই কি তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল? ৭৭ বছর পরেও রহস্য

Published : Jan 22, 2023, 11:19 AM IST
netaji subhash chandra bose

সংক্ষিপ্ত

দেশমাতৃকার জন্য যাঁরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাঁদের অন্যতম নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের উজ্জ্বলতম নায়ক নেতাজি। অথচ তাঁর জীবনের শেষদিকটা নিয়ে আজও রয়ে গিয়েছে রহস্য।

১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট কি সত্যিই তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছিল? সেই দুর্ঘটনায় কি সত্যিই নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল? ৭৭ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এই রহস্যের সমাধান হল না। ভবিষ্যতেও যে নেতাজির জীবনের শেষমুহূর্ত নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে সেই আশা দেখা যাচ্ছে না। নেতাজির তথাকথিত মৃত্যুরহস্য উদঘাটনের জন্য একাধিক তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। যে দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যুর কথা বলা হয়, সেই দুর্ঘটনা আদৌ ঘটেছিল কি না সেটা নিয়েই অনেকে সংশয় প্রকাশ করেন। দুর্ঘটনার তেমন কোনও প্রমাণ নেই। আহত বা মৃত নেতাজির কোনও ছবি নেই, তাঁর মৃত্যুর কথা বলা হলেও, ডেথ সার্টিফিকেট নেই। এইসব কারণে আজও অনেকের বিশ্বাস, তাইহোকুতে সেদিন বিমান দুর্ঘটনাই ঘটেনি। অনেকে আবার দাবি করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর ব্রিটিশদের কাছ থেকে আত্মগোপনের জন্য নেতাজি নিজেই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কথা রটিয়ে দেন। সোমবার নেতাজির জন্মদিবস। তার আগে ফের মৃত্যুরহস্য নিয়ে আলোচনা চলছে।

যে বিমান ভেঙে পড়ে নেতাজির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়, সেই বিমানে নেতাজি ছাড়াও জাপানের সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুনামা শিদেই, পাইলট ও কো-পাইলট ছিলেন বলে জানানো হয়েছিল। সেই সময় জাপানের দখলে ছিল তাইওয়ান। সেখানেই বিমানটি ভেঙে পড়ে বলে দাবি করা হয়। বলা হয়, দুর্ঘটনায় নেতাজির শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছিল। তিনি কোমায় চলে যান। এরপর রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে নেতাজির মৃত্যু হয়। কিন্তু এই দাবি নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে।

নেতাজির মৃত্যুরহস্যের সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ৪টি তদন্ত কমিশন গঠন করে। তার মধ্যে ফিগেস কমিশন, শাহনওয়াজ কমিশন ও খোসলা কমিশন বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যুর কথা বলে। কিন্তু এই ৩ কমিশনের রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। সেই কারণে ১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মনোজ কুমার মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে মুখার্জি কমিশন গঠন করা হয়। এর আগের সব তদন্ত কমিশনের রিপোর্টে বিমান দুর্ঘটনার কথা বলা হলেও, মুখার্জি কমিশন তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ওই বিমানে নেতাজির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হাবিব উর রহমান ছিলেন বলে দাবি করা হয়। ১২ থেকে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় বিমান দুর্ঘটনা ঘটলে কারও পক্ষেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। তাহলে নেতাজির শরীর পুড়ে গেলেও, তাঁর সহযোগী কীভাবে অক্ষত থেকে গেলেন? রেনকোজি মন্দিরে নেতাজির চিতাভষ্ম বলে যা রাখা আছে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলে মুখার্জি কমিশন। সরকার অবশ্য এই রিপোর্ট মানতে চায়নি। ফলে নেতাজির ঠিক কী হয়েছিল, সেটা আজও জানা যায়নি।

আরও পড়ুন-

‘নেতাজি’, ১২৬ তম জন্মবার্ষিকীর আগে ফিরে দেখা তাঁর জীবন, ‘অন্তর্ধান’-এ আজও জিজ্ঞাসাচিহ্ন

'মহামানব' তিঁনি যার কোনও স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই, কীভাবে পেলেন 'নেতাজি' এবং 'দেশ নায়ক' উপাধি

রাশিয়ায় নেতাজি! বিস্ফোরক বয়ান রাধাকৃষ্ণনের

PREV
click me!

Recommended Stories

এনডিএ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে কেন সম্মান? শীতকালীন অধিবেশনের ৭ম দিনে কী হবে?
8th Pay Commission: অষ্টম বেতন কমিশনে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে ঘনাচ্ছে রহস্য? কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা খুঁজছে উত্তর