চলে গিয়েছিলেন মৃত্য়ুর দোরগোড়ায় সেখান থেকে ফিরে আসা, মুকেশের কাহিনি শোনার মত

  • অঙ্গ প্রতিস্থাপন আজ একটি সফল পদ্ধতি
  • এতে বহু মানুষ নতুন করে জীবন পাচ্ছেন 
  • অঙ্গ প্রতিস্থাপনের খরচ অতি ব্যয় সাপেক্ষ
  • কিন্তু, স্বেচ্ছায় অঙ্গদান এই খরচকে অনেকটা কমিয়ে দিতে পারে

Ritam Talukder | Published : Jan 31, 2020 9:35 AM IST / Updated: Jan 31 2020, 03:56 PM IST

অঙ্গদান যে মানুষের কাছে আজ বরদানের মতো তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কলকাতা শহরে গত কয়েক বছরে ঘটে গিয়েছে একাধিক অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ঘটনা। এই অঙ্গ প্রতিস্থাপনে লিভার ট্র্যান্সপ্ল্যান্টেশন একটা অতি বিপদজনক বিষয়। কারণ, লিভার ট্র্যান্সপ্ল্যান্টেশনে মোর্টালিটি রেট বা রোগীর বেঁচে থাকার সংখ্যাটা বিশাল কিছু নয়। এই লিভার ট্র্যান্সপ্ল্যান্টেশনে নয়া উদাহরণ খাড়া হল মুকেশ কুমার নামে বছর চল্লিশের এক যুবককে ঘিরে। আর মুকেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে গেল ই এম বাইপাস মুকুন্দপুরের মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নাম।  

মুকেশের লিভার ট্র্যান্সপ্ল্যান্টশন যে পর্যারে হয়েছে এবং তাতে যে অর্থ লেগেছে তা এক গল্পের মতোই। কারণ, মুকেশ লিভারের অসুখে এমন একটা পর্যায়ে ছিলেন যে তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই লিভার প্রতিস্থাপনে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে তা চিকিৎসা ব্যবস্থায় এক নয়া দিশা দেখাতে পারে। এমনকী, যারা লিভারের অসুখে ভুগছেন ও খরচের বহরে পিছু হঠছেন তাদের কাছে মুকেশের কেস হিস্ট্রি উদাহরণ হতে পারে। 

বেহালার বাসিন্দা মুকেশ  লিভারের সমস্য়া নিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে এসেছিলেন। ১৩ জানুয়ারি বেহালার নিবেদিতা পার্কের বাসিন্দা মুকেশের কাডাভেরিক লিভার ট্রান্সপ্ল্য়ান্ট হয় । লিভার ট্রান্সপ্ল্য়ান্ট হওয়ার এক সপ্তাহ পরে শুক্রবার বাড়ি থেকে বের হন মুকেশ। এদিন দুপুরেই হাসপাতালে বসা সাংবাদিক সম্মেলনে মুকেশ জানান, তিনি এখন ভাল আছেন।

আরও পড়ুন, শহরে সস্তায় মিলছে পেট্রোল, সপ্তাহান্তে লং ড্রাইভের প্ল্য়ান কলকাতাবাসীর

 দুই দিদি আর বাবা-কে নিয়ে মুকেশের চারজনের পরিবার। অফিসে কাজ করতে গিয়ে বেশিরভাগ দিনই খালি পেটে অনেকটা সময় থাকতেন। এরপর হঠাৎ পেটে ব্য়াথা শুরু হয় তাঁর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গ্য়াসট্রোইনটেস্টিন্য়াল-র চিকিৎসক পিকে শেঠির কাছে আসেন। এরপরই লিভার ট্রান্সপ্ল্য়ান্টের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

 

সাধারণত লিভার ট্রান্সপ্ল্য়ান্টের পর রোগীকে প্রথম তিনমাস কড়া নিয়মের মধ্য়ে থাকতে হয়। এরপর ধীরেধীরে ৬ মাস এবং তারপর একবছরের মধ্য়ে রোগীর ওষুধের মাত্রা এবং পরিমাণ কমতে থাকে। সে আবার তাঁর স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরতে পারে। তবে লিভার ট্রান্সপ্ল্য়ান্টের পর কোনও ভারী কাজ করা যায় না। সেই সঙ্গে কিছু স্বাস্থ্য়বিধি অবশ্য়ই মেনে চলতে হয়। তবে খাওয়ার-দাওয়ার ক্ষেত্রেও রোগীর কিছু নিয়মবিধি মেনে চলতে হয়। প্রোটিন জাতীয় খাবারের দিকটায় প্রথম এক বছর বেশি করে খেয়াল রাখা হয়। 

আরও পড়ুন, ১৮২ মহিলার অন্তরঙ্গ ভিডিও তুলে ব্ল্য়াকমেল, জালে সম্ভ্রান্ত দুই পরিবারের যুবক

চিকিৎসক হীরক পাহাড়ি জানিয়েছেন, লিভার ট্রান্সপ্ল্য়ান্টের পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার জন্য় বিভিন্ন সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রোগীকে প্রথম ছয় মাস  কড়া নজরদারিতে রাখা হয়। নিয়মিত স্বাস্থ্য় পরীক্ষার মধ্য়ে দিয়ে রোগীকে যেতে হয়। আর এক চিকিৎসক বরুণ নাথ, যিনি এই ট্র্যান্সপ্ল্যান্টশনে জড়িত ছিলেন, তিনি জানান, লিভার ট্রান্সপ্ল্য়ান্টের ক্ষেত্রে পরিবারের থেকেই ডোনার বা দাতাকে বেছে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে দাতা বা সেই ডোনারের ভবিষ্য়তে শারীরিক  কোনও অসুবিধার  সম্ভাবনা নেই। তিনি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবেন। 

Share this article
click me!