পাশাপাশি সুন্দর একটি গ্রাম আদুলশেম এর গাঁ ঘেষে বহে গিয়েছে জুয়ারি নদী ও কুম্ভারজুয়া খাল। আদুলশেম, আরব সাগরের তীরে অবস্থিত আয়তনের হিসাবে ভারতের ক্ষুদ্রতম এবং জনসংখ্যার হিসেবে ভারতের চতুর্থ ক্ষুদ্রতম অঙ্গরাজ্য গোয়ার একটি ছোট্ট গ্রাম। গোয়ার রাজধানীর নাম পণজী। ভাস্কো দা গামা এর বৃহত্তম শহর। ঐতিহাসিক মারগাউ শহরে আজও পর্তুগিজ সংস্কৃতির প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। ষোড়শ শতকের শুরুতে পর্তুগিজ নাবিকেরা প্রথমে গোয়া নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখেন। পর্তুগিজদের এই বহিঃসামুদ্রিক অঞ্চলটি প্রায় ৪৫০ বছর টিকে ছিল। ১৯৬১ সালে ভারত সরকার এটিকে দেশের অন্তর্ভুক্ত করেন।
আরও পড়ুন- অল্পতেই হাঁপিয়ে পড়ছেন, কয়েকটি উপসর্গ দেখে বুঝে নিন রক্তাল্পতা কি না
গোয়ার এই আদুলশেম গ্রামে প্রতি বছর পৌষ মাসের অমাবস্যায় হয় এক অভিনব উৎসব। এই উৎসবের নাম 'মানজেম থাপনি'। আদুলশেম গ্রামে হিন্দু কৃষক পরিবারের বাস। এই গ্রামটিকে তিনদিকেই ঘেরা জল দিয়ে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই গ্রামে ঢুকতে গেলে প্রধান জলপথ কুম্ভারজুয়া খাল হয়েই ঢুকতে হয়। গোটা এলাকা তথা গোয়ার বাসিন্দাদের জলদস্যুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য গ্রামের কুম্ভারজুয়া খালে আদিল শাহই প্রথম কুমির ছেড়ে ছিলেন। এই খালে প্রচুর কুমির থাকায় এই খালের এমন নামকরণ করা হয়। তাই এই গ্রামবাসী মনে করেন কুমির তাঁদের রক্ষাকর্তা। সেই প্রথা মেনে এখনও প্রতি বছর পৌষ মাসের অমাবস্যায় কুমির পুজোর উৎসব মানজেম থাপনি পালন করা হয়।
আরও পড়ুন- নতুন বছরে শুরুতে স্ত্রীকে খুশি করতে চান, মেনে চলুন এই সহজ উপায়গুলি
মন্ত্র উচ্চারণ করে, কুম্ভারজুয়া খালে নতুন ফসল, মাছ, মুরগি ও মুরগির ডিম উৎসর্গ করা হয় কুমির দেবতার জন্য। জ্যান্ত কুমির পুজো করা দুরূহ তাই মাটির তাল দিয়ে কুমির বানিয়ে পুজো করা হয়। এরপর গ্রামবাসীরা প্রসাদ হিসেবে ভাত ও গুড় বিতরন করেন। এই প্রসাদের নাম চিরমুলেও। এই পুজো করা হয় তাঁদের গ্রামকে রক্ষা করার জন্য ও ভালো ফসল ও মাছ উৎপানের জন্য। এই মানজেম থাপনি শব্দের অর্থ হল মানজেম এর অর্থ হল কুমির আর থাপনি শব্দের অর্থ হল মাটির তাল থেকে তৈরি হওয়াকেই বোঝানো হয়। তাই আজও এই গ্রামবাসী ঐতিহ্যবাহী এই অভিনব রীতি পালন করে আসছেন, যা অবাক করার মতো।