প্রত্য়েকেরই কম বেশী কান সুড়সুড় করলেই তো হাত নিশপিশ করে ওঠে। ইয়ার বাড হোক কিংব পেন, হাতের কাছে যা থাকে কানে ঢুকিয়ে যত ময়লা ছিল টেনেটুনে বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টা সবাই প্রায় করে। অনেকের তো আবার মাঝে মাঝে কানে কিছু ঢুকিয়ে সুড়সুড়ি না খেলে ঠিক চলে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাজটা কিন্তু মোটেই ভাল নয়। কানকে খোঁচালে ইনফেকশন, ব্যথা, এমনকি শ্রবণশক্তির দফারফা সবকিছুই হতে পারে।
কানের ভিতরে জমে থাকা হলদেটে-খয়েরি রঙের ময়লা যার পোশাকি নাম ইয়ারওয়াক্স বা চলতি কথায় কানের খোল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কানের ময়লা কিন্তু আসলে কানকে সুরক্ষা দেয়। এটি আসলে কানের বাইরে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থির ক্ষরণ যাকে বলে সেরুমেন । এর মধ্যে থাকে ৬০ শতাংশ পরিমাণে কেরাটিন , স্যাচুরেটেড এবং ১২ থেকে ২০ শতাংশ পরিমাণে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। এবং ৬ থেকে ৯ শতাংশ পরিমাণে কোলেস্টেরল । এই ক্ষরণ হলদেটে হয়, এরই সঙ্গে বাইরে ধুলো-ময়লা ইত্যাদি মিশে একটা অদ্ভুত রঙ পরিণত হয় । যাকে প্রায় সবাই কানের ময়লা ভেবে বাইরে আনার চেষ্টা করে।
কানের খোলের আসল কাজ হল কানকে সুরক্ষা দেওয়া। সেরুমেন সামান্য অ্যাসিডিক, এর কাজ জীবাণু নাশ করা, কানকে হাইড্রেটেড রাখা। ইনফ্লুয়েঞ্জা, স্ট্রোপ্টোকক্কাসের মতো ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাককে নাশ করে এই সেরুমেন। কানের অন্দরমহলকে বাইরের ধুলোবালি থেকে রক্ষা করে। দরকার হলে কান নিজেই এই খোল সাফ করতে পারে। আসলে কান নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে জানে। কিন্তু ঘনঘন কটন বাড বা ইয়ার বাড দিয়ে কান খোঁচালে সেই স্তর নষ্ট হয়ে যায়। তখনই যাবতীয় ইনফেকশন, ব্যথা ইত্যাদি শুরু হয়। তাই এটা না করাই ভাল, কানে অসুবিধা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।