ত্বকের একটি অদ্ভুত রোগ হল শ্বেতী। শ্বেতী রোগ সাধারণত শরীরের বিশেষ কিছু স্থানে দেখা যায়। এই রোগের ফলে ত্বকের রং উৎপাদনকারী কোষ বা মেলানোসাইট রোগাক্রান্ত হলে বা সংখ্যায় কমে গেলে অথবা মরে গেলে মেলানিন নামক ত্বকের রঞ্জক তৈরি বন্ধ হয়ে যায় এবং ওই নির্দিষ্ট স্থানে সাদা দাগ পড়ে। শ্বেতী কোনও ছোঁয়াচে রোগ নয় বা প্রানঘাতী নয়। বিজ্ঞানীরা এই রোগের কারণ এখনও জানতে পারেননি। এখনও অবধি বিশ্বের ১০ কোটি মানুষ বর্তমানে এই রোগে আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা বেশির ভাগই মানসিক অবসাদে ভোগেন।
আরও পড়ুন- বার বার ক্ষিদে পায়, ওজনে কমাতে নিয়ন্ত্রণে আনুন এই অভ্যাস
শ্বেতী রোগের চিকিৎসা সময় সাপেক্ষ, পুরোপুরি নাও সারতে পারে। দেহের লোমশ অংশের চিকিৎসা অনেকটাই সফল হয়। কিন্তু যেসব জায়গায় লোম থাকে না, যেমন আঙুল, ঠোঁট ইত্যাদির চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। সাধারণতঃ কোনও ল্যাবরেটরি পরীক্ষা ছাড়া শুধু রোগের লক্ষণ দেখেই এই রোগ নির্ণয় করা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মলম, থেরাপি ব্যবহার করা হয়। তবে সব রোগীর জন্য সমস্ত চিকিৎসা পদ্ধতি এক রকম ফল দেয় না। শ্বেতী বংশগতভাবেও হয়।
আরও পড়ুন- হাঁচি পেলে আপনিও এমন করেন, এর ফলে হতে পারে মৃত্যুও
এক গবেষনায় দেখা গিয়েছে, প্রতি ১০০ জন শ্বেতী রোগীর মধ্যে ৩০ জনের ক্ষেত্রেই শ্বেতী বংশগত প্রভাবে হয়েছে। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে শ্বেতীর সাদা দাগ ছড়াতে থাকে নিজস্ব কারণে। এর প্রধান কারণ মেলানিনের কার্যকলাপ। ৫০ শতাংশ শ্বেতী ধরা পড়ে বয়স বছর দশেক হওয়ার পর। তাই যত অল্প বয়সে শ্বেতীর চিকিত্সা শুরু করা যায় তত ভাল। শরীরের যে কোনও জায়গায় সাদা দাগ দেখা দিলে দ্রুত চিকিত্সেকের পরামর্শ নিন। ডায়াবেটিস, হাইপার থাইরয়েড যাঁদের রয়েছে, তাঁদের শ্বেতী হওয়ার প্রবণতা তত বেশি থাকে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে মলম বা ওষুধে এই রোগ নিমূর্ল হওয়া সম্ভব। শ্বেতী স্থানে সকালের সূর্যের আলোতে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। ওষুধে প্রয়োগে না কমলে চিকিৎসেরা সে ক্ষেত্রে অস্ত্রপচারও করে থাকেন। শ্বেতী চিকিত্সাতয় অস্ত্রপচারের নাম পাঞ্চ গ্রাফটিং।