১৯ বছর পর নীরজের ইতিহাস, আজ গর্বিত অঞ্জু ববি জর্জ

বিশ্ব অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে এখনও পর্যন্ত ভারতের প্রথম এবং একমাত্র পদকটি রয়েছে অঞ্জু ববি জর্জের নামে, যিনি ২০০৩ সালে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন৷ এই ইতিহাসটিটি ভারতীয় অ্যাথলেটিকসের দুনিয়ায় অনেকের নজর এড়িয়ে গেলেও এটি কিন্তু বিশেষ উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলির মধ্যে একটি৷ ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সে এটি সত্যিই একটি স্মরণীয় মুহূর্ত ছিল।

Sahely Sen | / Updated: Jul 24 2022, 02:34 PM IST

বিশ্বজুড়ে মানুষের চোখ এখন অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে। সম্পূর্ণ ভারত রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছে ভারতের সোনার ছেলে নীরজ চোপড়া তাঁর জ্যাভেলিনের যাদুতে কীভাবে দেশকে দ্বিতীয় স্বর্ণপদকটি এনে দেন। যদি তিনি এবারে একটি পোডিয়াম ফিনিশ করতে সক্ষম হন, তবে তিনি এই বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতাটিতে পদক জয়ী প্রথম ভারতীয় হয়ে উঠবেন। এখনও পর্যন্ত ভারতের প্রথম এবং একমাত্র পদকজয়ী হচ্ছেন অঞ্জু ববি জর্জ, যিনি ২০০৩ সালে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন।

২০০৩ সালে লং জাম্পে দুর্দমনীয় অঞ্জু ববি জর্জ তাঁর টেক অফের পায়ে গুরুতর চোট নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন। ভীষণ কঠিন অধ্যাবসায় থাকা সত্ত্বেও ২০০০ সালের অলিম্পিকটি তিনি মিস করেছিলেন এবং এই ব্যর্থতা পুনরুদ্ধার করতে সময় লাগছিল কারণ তিনি মাত্র ১টি কিডনি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন৷ অলিম্পিক ডটকমের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে, অঞ্জু ববি জর্জ প্রকাশ করেছিলেন যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত কতটা ব্যথার মধ্যে দিয়ে তাঁকে অনুশীলন চালিয়ে যেতে হচ্ছিল। 

"তখন আমি ভেঙে পড়েছিলাম। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আমার জন্য এমন একটা কিছু ছিল যেটার জন্য আমি সিডনি অলিম্পিক মিস করার পর জোরদার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এবং আমি সেসময়ে ঠিক করে হাঁটতে পারতাম না। আমার শরীর একটা বলের মতো ফুলে গিয়েছিল", তিনি বলেছিলেন।

এত জোরালো প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও, এটি অঞ্জু ববি জর্জের উদ্যমকে বাধা দিতে পারেনি। অলিম্পিকের ময়দানে অঞ্জু সদর্পে ফিরে এলেন এবং ফাইনাল রাউন্ডের প্রথম প্রয়াসেই জর্জ ৬.৬১ মিটারের একটি দুর্দান্ত দিয়ে সফলতার শীর্ষে পৌঁছে যান। তার পরের দুটি প্রচেষ্টা দুটি ফাউলের ​​সাথে তিনি ফলো আপ করেন, যেগুলোর ফলে তাঁর ছন্দে খানিকটা বিচ্যুতি ঘটে। এই ফাউলগুলো তাঁর র‍্যাংককেও অনেকটা নামিয়ে দিয়েছিল, ফলে তিনি পদকের তালিকা থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন।

চূড়ান্ত প্রচেষ্টাটি অঞ্জু ববি জর্জের জন্য একেবারে ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’-র মতো প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল। ব্রোঞ্জ পদকের জায়গা পেতে তাঁকে জেড জনসনের ৬.৬৩ মিটারের জাম্পকে টেক্কা দিতে হয়েছিল। প্রাণ হাতে নেওয়া সেবারের সেই শেষ লং জাম্প অঞ্জু শেষ করেছিলেন ৬.৭০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। ঈশ্বরের আশীর্বাদ হোক বা নিছকই কাকতালীয় ঘটনা যে, জেড জনসন তাঁর শেষ প্রচেষ্টাটিতে একটি ভুল করেছিলেন, যেটার কারণে তাঁকে প্রতিযোগিতা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। এর ফলস্বরূপ অঞ্জু ববি জর্জই ২০০৩ সালের লং জাম্পে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন ।


এই মুহূর্তটি ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কম আলোচিত হলেও ভারতের পক্ষে এটি অবশ্যই গর্বের এবং উল্লেখযোগ্য তো বটেই। প্রকৃতপক্ষে, মিলখা সিং বা পিটি উষা ব্যতীত ভারত কখনওই সর্বোচ্চ মানের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড অ্যাথলিট তৈরি করেনি। তাই, অ্যাথলেটিক্সে ভারতকে সর্বদা একটি ছোট দেশ হিসেবে গণ্য করা হত। যাইহোক, বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের একটিমাত্র পদক, যা অ্যাথলেটিক্সের শীর্ষস্থানীয় অর্জনগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়, বিশ্বের নজর ঘুরিয়ে দিয়েছিল এবং ভারতকে বিশেষ সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করেছিল। 

আরও পড়ুন-
নীরজ চোপড়ার কেরিয়ারের এমন ১০ টি রেকর্ড, যা ভাঙা একপ্রকার অসম্ভব
'লক্ষ লক্ষ মানুষের অনুপ্রেরণা' - মোদী থেকে অঞ্জু ববি জর্জ, শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন নীরজ

এশিয়ানেট নিউজ সম্বাদ- মুখোমুখি অভিনব বিন্দ্রা

Read more Articles on
Share this article
click me!