
রাশিয়া ও ইউক্রেনের (Russia and Ukraine) মধ্যে বাড়ছে সংঘাত। পরিস্থিতি ক্রমশ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের আশঙ্কা, যে কোনও সময় ইউক্রেনের উপর হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। এদিকে আবার ইউক্রেনের ডোনেৎসক ও লুহান্সক (Donetsk And Luhansk) নামে দুটি অঞ্চলের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। পশ্চিমী দেশগুলির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তে খুশি নয় বহু দেশই। তারপর থেকেই রাশিয়ার প্রতি একাধিক কড়া মনোভাব নিচ্ছে আমেরিকা। জাতির উদ্দেশে ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট (American President) জো বাইডেন (Joe Biden) বলেছেন, "পুতিনকে প্রতিবেশী দেশের অঞ্চলকে দেশ ঘোষণা করার অধিকার কে দিয়েছে? এটি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের সূচনা।" পাশাপাশি পশ্চিমী অর্থ সহায়তা থেকেও রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাইডেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, বলপ্রয়োগের মাধ্যমে আরও বেশি অঞ্চল দখল করার অজুহাত খাড়া করছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, "ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে পুতিন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছেন। আমরা রাশিয়াকে তাদের কথা নয়, কাজের দ্বারা বিচার করব।"
আরও পড়ুন- ইউক্রেন থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে দেশে ফিরল ভারতীয় ছাত্ররা, সৌজন্যে এয়ার ইন্ডিয়া
এদিকে ইউক্রেনের দুটি এলাকাকে স্বাধীন ঘোষণা করার পরই সেই এলাকাগুলিতে সেনা মোতায়েন করে রাশিয়া। মস্কো সূত্রে খবর, পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরে এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য রাশিয়ান বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী-নিয়ন্ত্রিত শহর ডোনেৎসকের রাস্তায় রাশিয়ান ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করার ছবি। এরপর থেকেই একের পর এক রাশিয়ার উপর কড়া মনোভাব নিচ্ছে আমেরিকা।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চ্যালেঞ্জ, বিতর্কে আহ্বান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের
মঙ্গলবার 'প্রথম দফার' নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন বাইডেন। তাতে মূলত রাশিয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং এলিটদের নিশানা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়া যদি পিছু না হটে, তাহলে আগামীদিনে ধাপে ধাপে আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে তাদের উপর। বাইডেন বলেছেন, "আমার আশা, কূটনীতির পথ এখনও খোলা। আগের তুলনায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে পশ্চিমী অর্থ সহায়তা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে। রাশিয়ার এলিটদের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। আমরা দুটি বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ভিইবি ও রুশ সৈন্য ব্যাঙ্কেও নিষেধাজ্ঞা জারি করছি। রাশিয়ার সার্বভৌম ঋণের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করছি।"
আরও পড়ুন- রাশিয়ার হামলা কি তাহলে সময়ের অপেক্ষা, ইউক্রেনের বিক্ষুব্ধ অঞ্চলে সেনা পাঠালেন পুতিন
আর ইউক্রেনের প্রতি রাশিয়া যত আগ্রাসী মনোভাব নেবে আমেরিকা রাশিয়ার উপর ততই কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপাবে বলে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, "রুশ যেমন ভাবে এগোবে, তেমনভাবেই নিষেধাজ্ঞাও বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে ন্যাটোর প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি অটল থাকবে। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলির প্রত্যেক ইঞ্চি সীমা রক্ষা করা হবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকা ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেবে। রাশিয়া ইউক্রেনের চতুর্দিকে তাদের সেনা মোতায়েন করে রেখেছে। রাশিয়ার প্রত্যেক চ্যালেঞ্জের জবাব সম্মিলিতভাবে দেওয়া হবে।" তবে শুধুমাত্র আমেরিকাই নয়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব ব্রিটেন ও জার্মানিরও। তারাও একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।