ভাগীরথীর শান্ত পরিবেশে চলবে দেবীর আরাধনা। শ্মশানকালী পুজোকে কেন্দ্র করে টানা চারদিন ধরে উৎসবে মেতে ওঠেন মুর্শিদাবাদের মহম্মদপুরবাসী।
নদী থেকে জনপদ রক্ষায় 'শ্যামা মা' (Shayama Puja 2021)। ভাগীরথীর শান্ত পরিবেশে চলবে দেবীর আরাধনা। দেবীর আরাধনায় এমন বৈচিত্র সচরাচর দেখা দুষ্কর। ভক্তেরা মায়ের কাছে নিজের সমস্যা তুলে ধরতে এতোটুকুও সংকোচ করেন না মুর্শিদাবাদের মোহাম্মদপুর এলাকার শ্মশান কালীর পুজোয় ( Kali Puja 2021 )। আর তাই শারদীয়ার দুর্গাপুজো নয়, মহম্মদপুর শ্মশানকালী পুজোকে কেন্দ্র করে টানা চারদিন ধরে উৎসবে ( Cultural program)মেতে ওঠেন মোহাম্মদপুরবাসী (Residents of Mohammadpur )।
আরও পড়ুন, Kali Puja 2021- কালীপুজোয় অ্যাপ ও গাইডলাইন প্রকাশ, দেড় হাজার পুলিশ মোতায়েন বারাসাতে
চারিদিকে কোলাহলকে বাদ দিয়ে নির্মল পরিবেশে ভাগীরথীর পারে মহম্মদপুর গ্রামের মানুষজন দীর্ঘ বছর ধরে শ্মশানকালীর পুজো করে আসছেন নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে। পুজো উপলক্ষ্যে চারদিন ধরে বাউল, কবিগান সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। গ্রাম্য মেলা বসে। তবে এবার তাতে ছেদ পড়ল।করোনা মহামারীর কারণে অনুষ্ঠান ও মেলা বন্ধ । তবে পুজোর দিন বিকেল থেকেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সের পুরুষ ও মহিলারা জমায়েত হবে ভাগীরথীর পাড়ে মহম্মদপুর শ্মশানকালী মন্দিরে। পুজো শেষে সকল দর্শনার্থী ও ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদী ভাঙন মহম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দাদের প্রধান সমস্যা ছিল। বর্ষা এলেই গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়তেন। প্রতি বছর ভাগীরথীর ভাঙনে নদী তীরবর্তী চাষের জমি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছিল। ধীরে ধীরে ভাগীরথী গ্রামের দিকে সরে আসতে শুরু করে। ভাগীরথীর এই ভাঙন থেকে রক্ষা পেতেই শ্মশানকালী পুজো শুরু করেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীদের দাবি, পুজো শুরু হওয়ার পরে আর ওই এলাকায় ভাঙন হয়নি। গ্রামবাসীদের রক্ষা করতেই দেবী নদী ভাঙন রুখে দিয়েছেন। সম্প্রতি একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পাড় বাঁধিয়ে সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছে। বিনোদন পার্ক হয়েছে। গ্রামবাসীরা বলেন, পুজো শুরুর আগে ভাগীরথীর পাড়ে মৃতদেহ দাহ করা হত। এলাকা জঙ্গলে ঘেরা ছিল। জঙ্গল পরিস্কার করে ত্রিপল খাটিয়ে পুজো শুরু হয়। পরে গ্রামবাসীদের প্রচেষ্টায় মন্দির গড়ে ওঠে। পুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা দেবাশিস দাস বলেন, এই গ্রামের রীতি একটু আলাদা , দুর্গাপুজো হলেও শ্মশানকালী পুজোই প্রধান। কালীপুজো উপলক্ষ্যে মহম্মদপুর, দলেলপাড়া, নতুন দলেলপাড়া শাওড়াগাছি, গোবিন্দটোলা, চৌধুরীপাড়া, কুঠিরামপুর, কালীতলা গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতারা উৎসবে মেতে ওঠেন। শুধু ভাগীরথীর এপারের গ্রামের মানুষেরাই নয়, ওপারে এলাকার মানুষেরাও উৎসবে মেতে ওঠেন"। পুজোর অপর উদ্যোক্তা তুহিন দাস, স্বপন বিশ্বাস বলেন" মা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন তাইতো ভাঙনে তলিয়ে গিয়েও আজ আমরা বেঁচে রয়েছে। আগামী দিনেও থাকবো।আর এই ভাবেই ভাগীরথীর পারে আড়ালে-আবডালে মায়ের আরাধনা চলবে যুগ যুগ ধরে"।
আরও দেখুন, বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে