বিধায়ক ইদ্রিস আলি তখন বাড়ির মধ্যেই ছিলেন। তবে বিধায়ক বা তার পরিবারের লোকেদের কোনও শারীরিক ক্ষতি হয়নি বলেই খবর। তখন অভিযুক্তরা বাড়ির সামনে থাকা বেশ কয়েকটি চেয়ার ছুড়ে ফেলে এবং ভাঙচুর চালায়
অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার রাতে ভগবানগোলা থানার সুবর্ণমৃগি এলাকায় বিধায়ক ইদ্রিস আলির বাড়িতে হামলার অভিযোগের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ বাড়ির সামনে রাখা বেশ কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে ভগবানগোলা থানার পুলিস ঘটিনাস্থলে ছুটে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জানা গিয়েছে, এদিন রাত প্রায় ন'টা নাগাদ বেশ কয়েকজন বিধায়কের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
বিধায়ক ইদ্রিস আলি তখন বাড়ির মধ্যেই ছিলেন। তবে বিধায়ক বা তার পরিবারের লোকেদের কোনও শারীরিক ক্ষতি হয়নি বলেই খবর। তখন অভিযুক্তরা বাড়ির সামনে থাকা বেশ কয়েকটি চেয়ার ছুড়ে ফেলে এবং ভাঙচুর চালায়। তারা জানায়, বিধায়ক ব্লক, অঞ্চল সভাপতি করার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছেন। বিধায়কের ছেলে এলাকার কয়েকজন আশাকর্মীর থেকে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়েছেন।
বিধায়ক স্থানীয় এক নেতাকে দিয়ে পঞ্চায়েতের টিকিট পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। বিধানসভার যেকোন কাজের টেন্ডার নিজের ছেলেকে পাইয়ে দিচ্ছেন। যদিও এই অভিযোগ বিষয়ে বিধায়ককে ফোন করলে তিনি ফোন তোলেন নি। রানীতলার পুলিস আধিকারিক বলেন, এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয় নি। তবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তবে ঘটনার পরেই দলীয় সূত্রে খবর সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর দাবি কিছু স্থানীয় তৃণমূল নেতা সন্দেহজনক ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকেদের দলের ব্লক-স্তরের সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছেন। এরই প্রতিবাদ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দাবি দলের পুরোনো নেতা-কর্মীদের গুরুত্বহীন করে রেখেছেন ইদ্রিশ আলীর। গত কয়েক বছর ধরেই এই ধারা চলে আসছে। ফলে ক্ষোভ জমে উঠেছে বিধায়কের বিরুদ্ধে। ওই স্থানীয় তৃণমূল নেতার বক্তব্য, এলাকার রাজনৈতিক সমীকরণ না বুঝেই গা-জোয়ারি করে চলেছেন বিধায়ক। জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছেন নিজের মতামত। তারই ফল পেয়েছেন সোমবার রাতে।
আরও পড়ুনঃ
SSKM ফেরালেও CBI দফতরে নয়, যথারীতি গরু পাচারকাণ্ডে হাজিরা এড়ালেন অনুব্রত মণ্ডল
নির্ধারিত সময়ের চার দিন আগেই শেষ বাদল অধিবেশন, সরকার-বিরোধীদের দুই রকম মত
মনের জোর বাড়ায় তাস, সাহেব-বিবি-গোলামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ৭টি ইতিবাচক শক্তি
তবে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান। তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগও এই বিষয়ে শোনা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এমনিতেই দল বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে। এসএসসি কেলেঙ্কারিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেল ও কয়েক কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় শাসক দল যথেষ্ট কোণঠাসা।
তাঁর বান্ধবীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। যারসঙ্গে স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির যোগ রয়েছে বলে মনে করছেন ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অধিকারিকরা। ইডির দীর্ঘ জেরা , মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়া, তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে সঙ্গী হয়েও দল থেকে বাদ পড়া সব মিলিয়েই সময়টা ভাল যাচ্ছে না পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের।