বাংলায় দুর্নীতির জালে আর কারা, ইডি-র হাতে লম্বা লিস্ট?

প্রশাসনের অন্দরে দোলাচল ঠেকাতে শুরু হয়ে গিয়েছে দীর্ঘ চর্চা এবং জল্পনা। বর্তমানে অনেকেরই প্রশ্ন, প্রথম দফার চোখা প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে আরও কিছু চেনা পরিচিত নাম উঠে আসবে কি?

Sahely Sen | / Updated: Aug 13 2022, 11:06 AM IST

রাজ্যের শাসক দলের নেতা মন্ত্রীরা অনেকেই এখন দুর্নীতির জালে পড়ে এসে গিয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর নজরে। রাজ্যের আমলা ও পুলিশকর্তাদের ইডি যেভাবে তলব করে চলেছে, সেই চাপ রাজ্য প্রশাসনের ওপরে কেন্দ্র সরকারের একটা রাজনৈতিক কৌশল বলেই মনে করছে তৃণমূল। 

প্রশাসনের অন্দরে দোলাচল ঠেকাতে শুরু হয়ে গিয়েছে দীর্ঘ চর্চা এবং জল্পনা। বর্তমানে অনেকেরই প্রশ্ন, প্রথম দফার চোখা প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে আরও কিছু চেনা পরিচিত নাম উঠে আসবে কি? অনেকের মতে, বেশিরভাগ সময়ই পদস্থ সরকারি অফিসাররা নিজেরা বিপাকে পড়লে সেই দায় বর্তাবার চেষ্টা করেন ওপর মহলের দিকে।  ইডির নজরের অধীনেও তেমন ঘটনাই ঘটবে কি না, তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা চলছে রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে।

অভিজ্ঞ আধিকারিকদের একাংশ মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, নির্দিষ্ট সূত্র ধরে এগিয়েই বড় অফিসারদের তলব করছে ইডি। সেই কারণে সম্পূর্ণ অপরাধের দায় ‘ওপরওয়ালা’-র দিকে ঠেলে দেওয়ার সুযোগ খুব বেশি থাকছে না।

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের আরেক অংশের মতে,বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বর্ধমান, আসানসোল, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার মতো এলাকায় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা সরকারি অফিসারদের তলব করেছে  ইডি। অর্থাৎ, বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তে শাসকমণ্ডলীর যোগসাজেশের খোঁজ করার পাশাপাশি, দুর্নীতিতে প্রশাসনিক সহযোগিতা হয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখতে চায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। প্রবীণ কর্তাদের একাংশ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তলব করা ওই অফিসারদের চাকরির জীবন এখনও অনেকটা বাকি। ফলে, যেকোনও গুরুতর তদন্তে তাঁদের কেরিয়ারে দাগ লাগলে চাকরির পথ আর সহজ হবে না। তাই তদন্তের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সঠিক জবাব দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এক অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্তা বলেছেন, “মূলত অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখে ইডি। এত জন অফিসারকে ডেকে পাঠানোর মানে, এই কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে সুনির্দিষ্ট তথ্য-নথি হয়তো রয়েছে। সেই দায় থেকে নিজেদের মুক্ত করতে তাঁদের তরফে প্রভাবশালী তত্ত্ব সামনে আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”


কয়েকজন কুশলী প্রশাসনিক কর্তাদের মাধ্যমে জানা গেছে যে, আইএএস, আইপিএস বা ডব্লিউবিসিএস অফিসারেরা যখন কাজে যোগ দেন, তখনই স্পষ্ট করে দেওয়া হয় যে, অনৈতিক বা বেআইনি কাজের সঙ্গে তাঁরা কখনওই যুক্ত হবেন না। তাঁরা সর্বদা প্রভাবমুক্ত থাকবেন। এমন পরিস্থিতি আসতেই পারে যেখানে রাজনৈতিক প্রভুর নির্দেশ তাঁকে মানতে হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও অনৈতিক বা তেমন কোনও নির্দেশ যদি আসে, যা আইন অনুমোদন করে না, তা তিনি অমান্য করতেই পারেন। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে ‘রাজনৈতিক রোষ’-এর মুখে পড়তে হতে পারে। রোষের প্রভাবে হয়তো তাঁকে এমন কোনও পদে বদলি হতে হবে, যে পদের কোনও জৌলুস নেই। তবে, জীবনে কখনও তাঁকে কর্মজীবনের সততা বা নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে না।



আরও পড়ুন-
'গরুতো আর পিঁপড়ে নয়', অনুব্রতর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে কেন্দ্রকে আক্রমণ তৃণমূলের
সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় ইডি 'না', কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ রাজ্যের তিন মন্ত্রী
ফের অস্বস্তিতে শাসকদল, নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তির একযোগে তদন্তে ED

Share this article
click me!