Ashwani Kumar: স্বপ্নের দৌড় শুরু করলেন অভিষেকের মঞ্চ থেকেই? অন্তত সেইরকমটাই মনে করছেন অনেকে।
Ashwani Kumar: সাইকেলে কিংবা ৩০ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে অনুশীলন করতে যেতেন একটা সময়ে। আর সোমবার, অশ্বিনী কুমার যখন একের পর এক উইকেট নিচ্ছিলেন, তখন তাঁর বাবা হর্কেশ তাকিয়ে ছিলেন ঘরের মধ্যে রাখা সেই সাইকেলটির দিকে।
হয়ত ভাবছিলেন, কোন জায়গা থেকে শুরু করে তাঁর ছেলে আজ কোথায় পৌঁছে গেছে। এদিকে মা মীনা কুমারী অপেক্ষায় রয়েছেন, ছেলে বাড়ি ফিরলে তাঁকে গোলা রুটি আর আলুর পরোটা করে খাওয়াবেন বলে।
পাঞ্জাবের চণ্ডীগড়ে, ঝনঝেরি গ্রামে জন্ম অশ্বিনীর। সেখান থেকে মোহালিতে অবস্থিত পাঞ্জাব ক্রিকেট সংস্থার স্টেডিয়ামটি প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে। প্রতিদিন ভোর ৫টার সময় ঘুম থেকে উঠে তৈরি হয়ে নিতেন মাঠে যাওয়ার জন্য। আর একমাত্র ভরসা ছিল তাঁর সেই সাইকেলটি। কখনও কখনও বাবার থেকে ৩০ টাকা নিতেন অটো করে যাওয়ার জন্য।
‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর বাবা হর্কেশ জানিয়েছেন, “সে বৃষ্টি হোক বা রোদ উঠুক, আমাদের অশ্বিনী মোহালি যাবেই। যদিও পরে মুল্লানপুরের স্টেডিয়ামে যেত। কখনও সাইকেলে করে, আবার কখনও অটো করে যেত। আমার এখনও মনে আছে, ৩০ টাকা চাইত আমার কাছে অটো করে যাওয়ার জন্য।”
আর তাঁকেই এবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (Mumbai Indians) ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে মেগা নিলামে কিনে নেয়। বাবা হর্কেশ আরও যোগ করেছেন, “প্রত্যেকদিন রাতে ১০টার মধ্যে শুয়ে পড়ত। আর পরদিন উঠত ঠিক ভোর ৫টায়। সারাদিনই অনুশীলন করত বলতে গেলে।”
তাঁর নিজের গ্রামেরই একটি সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করতেন অশ্বিনী কুমার। আর সেই স্কুলের মাঠেই প্রথম ক্রিকেট খেলা শুরু। বন্ধুদের এবং দাদা শিবরানাকে ডেকে নিয়ে যেতেন সেই মাঠে। অশ্বিনী বল করতেন, আর বাকিরা করতেন ব্যাটিং। যে যাত্রা ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়। আর মাত্র ১১ বছরের মধ্যেই অশ্বিনী পৌঁছে গেলেন ওয়াংখেড়েতে।
অন্যদিকে, পাঞ্জাবের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময় তিনি সতীর্থ হিসেবে পাশে পেয়েছিলেন অভিষেক শর্মা, রমনদীপ সিং এবং আর্শদীপ সিং। উল্লেখ্য, গত ২০১৯ সালে, রঞ্জিতে অভিষেক হয় অশ্বিনীর।
তাঁর দাদা শিবরানার কথায়, “গ্রামের কিছু ছেলে এবং আমাকে ডেকে নিয়ে রোজ মাঠে যেত অশ্বিনী। আমরা সবাই ভোরবেলা স্কুলের মাঠে খেলতাম। আমরা ব্যাট করতাম আর অশ্বিনী বল করে যেত। মাঝেমধ্যে গ্রামের কাছে একটা মাঠেও যেত ক্রিকেট খেলতে। সাধারণ মানের জুতো পরেও প্রচণ্ড গতিতে বল করতে পারত ও।”
অপরদিকে মোহালি ক্রিকেট সংস্থার কোচ হরবিন্দর বেদবান বলেন, “পেস বোলারের জন্য আমরা সবসময় এমন ছেলেদের খুঁজি, যাদের পেটাই চেহারা। কিন্তু একটা সময় বল করার সময় অশ্বিনীর পা ঠিকঠাক জায়গায় পড়ত না। কিন্তু আমরা সেটা নিয়ে কাজ শুরু করি। খুব ভালো বাউন্সার দিতে পারে ও। আর সেইসঙ্গে শর্ট বলও বেশ ভালো করে।”
আজ সেই চেষ্টার ফল মিলল হাতেনাতে। পাঞ্জাবের সেই ছেলেটা আজ স্বপ্ন দেখাচ্ছে মুম্বইকে। মায়ানগরী, খাঁটি সোনা চিনতে ভুল করেনা।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।